পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় অধ্যায়
৩৫

তিনি বলেন,—“আমি যদি সেখানে সম্পূর্ণ হিন্দুভাবে অবস্থান করি, তাহা হইলে কেন আমাকে সমাজচ্যুত হইতে হইবে, তাহা আমি বুঝিতে পারি না। আমি বেশ-ভূষা ও আচার-ব্যবহারাদি সর্ব্ববিষয়ে আমার পূর্ব্বপুরুষদিগের প্রদর্শিত মার্গের অনুসরণ করিব, সংকল্প করিয়াছি। যেখানেই গমন করি না কেন, আমি যে হিন্দু রমণী, ইহা আমি কখনও ভুলিব না। ইহার পরও যদি কেহ আমায় সমাজচ্যুত করিতে চাহেন, তবে তাঁহারা এখনই তাহা করিতে পারেন। সেজন্য আমি ভীত নহি।”

 পঞ্চম প্রশ্ন সম্বন্ধে তিনি বলেন, বিপদ স্বদেশে বিদেশে সর্ব্বত্র সকলেরই ঘটিয়া থাকে ও ঘটিতে পারে, সেজন্য দেশহিতকর অনুষ্ঠানে কাহারও বিরত হওয়া উচিত নহে।

 শেষ প্রশ্নের উত্তরে শিবি ও ময়ূরধ্বজ রাজার উপাখ্যান বিবৃত করিয়া তিনি বলেন, “বহু জন-সমাজের হিতের জন্য ব্যক্তিগত শ্রম স্বীকারে পশ্চাৎপদ হওয়া বিবেক-সম্পন্ন ব্যক্তির কর্ত্তব্য নহে। যে সমাজে বাস করিতেছি, অহরহঃ যে সমাজের নিকট হইতে নানা প্রকার সাহায্য প্রাপ্ত হইতেছি, সেই সমাজের হিতসাধনের জন্য, প্রাপ্ত উপকারের পরিশোধ করিবার জন্য, কষ্ট স্বীকার করা প্রত্যেকেরই কর্ত্তব্য। অপরে সে কর্ত্তব্য-পালনে ঔদাস্য-প্রকাশ করিয়াছে বলিয়া আমাকেও কি তাহাই করিতে হইবে?”

 শ্রীরামপুরের কলেজেও তিনি এই মর্ম্মে একটী বক্তৃতা করেন। ইহার পরে শিক্ষিত সমাজের অনেকে তাঁহাকে উৎসাহ দান করিয়া পত্র লিখেন। ডাক বিভাগের ডিরেক্টর এই সংবাদ অবগত হইয়া