পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



চতুর্থ অধ্যায়

ষ্টীমারে আরোহণের পর আনন্দী বাঈর ঘোর পরীক্ষা আরব্ধ হইল। তিনি একে প্রিয়জনের বিরহে ও অপরিচিত দেশের দুঃখ কষ্টের কথা স্মরণ করিয়া বিহ্বল হইয়াছিলেন, সমুদ্র-পীড়ায় তাঁহার শরীর নিতান্ত অসুস্থ হইয়া পড়িয়াছিল, তাহার উপর শ্রীমতী জন্সনের দুর্ব্যবহারে তাহাকে ঘোরতর নিগ্রহভোগ করিতে হইল। শ্রীমতী জন্সন মিশনরি-রমণী, খৃষ্টভক্তি-প্রচারের জন্য স্বামীর সহিত ভারতবর্ষে আগমন করিয়াছিলেন। তাঁহার চেষ্টায় এদেশের কত জনের হৃদয় খৃষ্টের প্রতি আকৃষ্ট হইয়াছিল, তাহা জানি না; কিন্তু তিনি আনন্দী বাঈকে খৃষ্টীয় ধর্ম্মের দীক্ষা-গ্রহণের জন্য যেরূপ অসীম যন্ত্রণা প্রদান করিয়াছিলেন, তাহা পাঠ করিলে, মিশনরিদিগের প্রতি অভক্তির সঞ্চার হয়। ষ্টীমারে অবস্থানকালে তিনি প্রথমে মিষ্ট উপদেশ, তাহার পর প্রলোভন এবং পরিশেষে তিরস্কার ও ভয়-প্রদর্শন দ্বারা অসহায় আনন্দী বাঈকে স্বধর্ম্মত্যাগ করাইবার চেষ্টা করিয়াছিলেন। কিন্তু আনন্দী বাঈ কিছুতেই স্বধর্ম্মত্যাগে স্বীকৃত হন নাই!

 ইহার পর অন্য প্রকার প্রলোভনের ও বিপদের সূত্রপাত হইল। সেই ষ্টীমারের ইঞ্জিনীয়ার সাহেব শ্রীমতী জনের সহায়তায় আনন্দী বাঈকে বিপথগামিনী করিবার চেষ্টা করিতে লাগিল। পাপিষ্ঠ তাঁহাকে একাকিনী দেখিলেই নিকটবর্ত্তী হইয়া তাঁহার তোষামোদে