পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৬
আনন্দী বাঈ

পত্র না লিখিয়া একবার বিস্তারিত পত্র লিখিও।” এইরূপ ক্ষণে ক্ষণে তাঁহার মতের পরিবর্তন হওয়ায় কি করিলে তাঁহার সন্তোষ জন্মিবে, আনন্দী বাঈ তাহা বুঝিয়া উঠিতে পারিতেন না। কাজেই পত্র-সংক্রান্ত গোলযোগ ক্রমে বাড়িতে লাগিল। ইহাতে গোপাল রাও প্রথমে ভাবিলেন যে, আনন্দী বাঈর আলস্য বৃদ্ধি পাইয়াছে। পরে তাহার মনে হইতে লাগিল, অহঙ্কার-বশে তাঁহাকে পত্র লিখিতে তিনি ঔদাস্য প্রকাশ করিতেছেন। তদ্ভিন্ন আনন্দী বাঈ গুজরাথী বেশ-গ্রহণের পূর্ব্বে গোপাল রাওয়ের অনুমতি গ্রহণ করেন নাই বলিয়াও তিনি তাঁহার প্রতি অতীব বিরক্ত হইলেন। বলা বাহুল্য, আনন্দী বাঈর সেরূপ অনুমতি লইবার কোনও প্রয়োজন ছিল না। কারণ, গোপাল রাও নিজেই তাঁহাকে ইতঃপূর্বে প্রয়োজন হইলে পাশ্চাত্য পরিচ্ছদ-ধারণ ও “আমিষ পর্য্যন্ত ভোজন করিবার অনুমতি দিয়াছিলেন। কিন্তু এ সময়ে তাঁহার সে কথা মনে রহিল না। তিনি ১৮৮৪ খ্রীষ্টাব্দের ৬ই জানুয়ারী আনন্দী বাঈকে ‘গর্ব্বিতা’ ও ‘অবাধ্য’ বলিয়া অতি কঠোর তিরস্কার-পূর্ণ এক পত্র লিখিলেন। কিন্তু গোপাল রাওয়ের নিষ্ঠুরতার এই খানেই শেষ হয় নাই। তিনি একটি পত্রে তাঁহাকে “বিশ্বাসঘাতিনী” পর্য্যন্ত বলিতে কুণ্ঠিত হন নাই। গোপাল রাও বলেন, আনন্দী বাঈর চরিত্র লক্ষ্য করিয়া তিনি এই কঠোর শব্দের ব্যবহার করেন নাই। তাঁহার পাঠাভ্যাসে অমনোযোগিতাই গোপাল রাওয়ের নিকট “বিশ্বাসঘাতকতা” বলিয়া বিবেচিত হইয়াছিল। কিন্তু এই সকল পত্র