পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ অধ্যায়
৫৭

পাঠ করিয়া আনন্দী বাঈর মর্ম্মপীড়ার অবধি রহিল না। সুখের বিষয়, ইহার পর সহধর্ম্মিণীর ক্ষমা-প্রার্থনা ও ক্ষোভপূর্ণ পত্র পাঠ করিয়া গোপাল রাওয়ের পূর্বভাব দূরীভূত হইল। জ্ঞানলাভ-বিষয়ে উৎসাহিত করিবার জন্য তিনি ইহার পর তাঁহাকে “সরস্বতী” নামে অভিহিত করিতে লাগিলেন। অব্যবস্থিতচিত্ত ব্যক্তিমাত্রই এইরূপেই ক্ষণে রুষ্ট ও ক্ষণে তুষ্ট হইয়া থাকেন।

 বাল্যকালে আনন্দী বাঈর উদ্যানরচনার প্রতি বিশেষ অনুরাগ ছিল, একথা ইতঃপূর্ব্বেই উক্ত হইয়াছে। এতদিন পর্য্যন্ত তিনি উদ্যানসম্বন্ধে চৰ্চ্চা করিবার অবসর প্রাপ্ত হন নাই। ফিলাডেলফিয়ায় আসিয়া তিনি সে বিষয়ে মনোনিবেশ করেন। কলেজে চিকিৎসা শাস্ত্রের অধ্যয়ন করিয়া তিনি যে সামান্য অবকাশ পাইতেন, তাহা উদ্ভিদ্‌-বিদ্যার (বোটানির) আলোচনায় অতিবাহিত করিতেন। বনপুষ্পাদি-সংগ্রহপূর্ব্বক তাহাদিগের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় তাঁহার বহু সময় অতিবাহিত হইত। তিনি জর্ম্মান ও ফরাসী ভাষার অনুশীলনও আরম্ভ করিয়াছিলেন। কিন্তু সময়াভাবে পরিশেষে তাহাকে সে অধ্যবসায় পরিত্যাগ করিতে হয়। সংস্কৃত সাহিত্যের প্রতি তাঁহার যে অনুরাগ ছিল, বিদেশে গিয়াও তাহার লাঘব হয় নাই। গোপাল রাও তাঁহাকে সময়ে সময়ে এদেশ হইতে সংস্কৃত গ্রন্থাদি পাঠাইয়া দিতেন।

 একখানি পত্রে আনন্দী বাঈ একবার ভারতবর্ষ হইতে শ্রীমতী কার্পেণ্টারকে পত্র লিখিয়াছিলেন যে, “ভারতবর্ষ সম্বন্ধে মার্কিনবাসীরা নিতান্ত অজ্ঞ। হিন্দুশাস্ত্রের ও হিন্দু আচারব্যবহারের