পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চম অধ্যায়
৭১

প্রকৃতি মিশনরিরা অন্য দেশের বিষয়ে নানা প্রকার অলীক কথার রটনা করিতে ভালবাসে। এরূপ অবস্থায় আপনি যদি ভারতবর্ষ সম্বন্ধে বক্তৃতা করিয়া এদেশবাসীর ভ্রান্ত ধারণা সমূহ দূর করিবার যত্ন করেন, তাহা হইলে বড় ভাল হয়।” গোপাল রাও এ প্রস্তাবে স্বীকৃত হইলেন। একেই তিনি একটু পরচ্ছিদ্রান্বেষী ছিলেন, তাহাতে আবার স্ত্রীর অনুরোধে ও স্বদেশভক্তিতে প্রণোদিত হইয়া যখন তিনি বক্তৃতা আরম্ভ করিলেন, তখন উহা এক শ্রেণীর শ্রোতৃবর্গের বিশেষ চিত্তাকর্ষণ করিল। এইরূপে তিনি নগরে নগরে বক্তৃতা করিয়া বেড়াইতে লাগিলেন। আনন্দী বাঈ স্বীয় পাঠাভ্যাসে মনোনিবেশ করিলেন।

 শীত প্রধান আমেরিকায় প্রায় তুহিনপাতে পথঘাট সমাচ্ছন্ন হইয়া যায়। পিচ্ছল তুষারময় পথে গমনাগমন করিতে গিয়া অনেক বালক বালিকা ও যুবতী স্খলিত-পদ হইয়া সাধারণের উপহাসভাজন হইয়া থাকেন। আনন্দী বাঈ তিন বৎসর আমেরিকায় ছিলেন। কিন্তু এই সুদীর্ঘ কালের মধ্যে একবার মাত্র হিমানীপিচ্ছল পথে তাঁহার পদস্খলন হইয়াছিল। এই দুর্ঘটনায় তাঁহার হাতে যে কাঁচের চুড়ি ছিল, সেগুলি সব ভাঙ্গিয়া যায়। আনন্দী বাঈ নূতন চুড়ি না পাওয়া পর্যন্ত অন্ন-জল গ্রহণ করেন নাই। গোপাল রাও সে সময়ে আমেরিকাতেই ছিলেন। তিনি এই ঘটনার অব্যবহিত পরেই স্বীয় প্রিয়তমাকে নূতন সোণার চুড়ি তৈয়ার করাইয়া দিলেন। এই ঘটনার উল্লেখ করিয়া আনন্দী বাঈ শ্রীমতী কার্পেণ্টারকে লিখিয়াছিলেন, “আমি সোণার চুড়ি