পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
আনন্দী বাঈ

ব্যাকুলতা জন্মিয়াছিল, তাহা এই সকল পত্রে স্পষ্ট বুঝিতে পারা যায়।

 আমেরিকা-ত্যাগের পূর্ব্বে আনন্দী বাঈকে ডাক্তারদিগের পরামর্শক্রমে কিছুদিন পার্ব্বত্য প্রদেশে রাখা হইয়াছিল। কিন্তু তাহাতেও তাঁহার স্বাস্থ্যোন্নতি ঘটিল না; বরং কাশির সঙ্গে ক্রমশঃ তাঁহার জ্বর দেখা দিল। এইরূপ অসুস্থ অবস্থায় তিনি একদিন সকলের নিষেধ অতিক্রম করিয়া একটি সঙ্কটাপন্না প্রসূতিকে প্রসব করাইবার জন্য তাহার গৃহে গমন করিয়াছিলেন। তথায় দশঘণ্টা কাল পরিশ্রম করায় ও প্রত্যাবর্ত্তন-কালে সহসা বৃষ্টির জলে সিক্ত হওয়ায় তাঁহার পীড়া অতিশয় বৃদ্ধি পাইল। পরোপকার-প্রণোদিতা হইয়া তিনি সেই রমণী ও তাহার গর্ভস্থ শিশুর প্রাণ রক্ষা করিলেন বটে, কিন্তু সেজন্য তাঁহাকে পরিশেষে আত্মপ্রাণ বিসর্জ্জন করিতে হইল। এই অত্যাচারে তাঁহার যে পীড়ার বৃদ্ধি হয়, তাহাতেই পরিশেষে তাঁহার জীবনান্ত ঘটে।

 এইরূপে পীড়-বৃদ্ধি হওয়ায় তাঁহাকে কিছুদিন ফিলাডেলফিয়ার স্ত্রীচিকিৎসালয়ে রাখিয়া চিকিৎসিত করান হয়। কিন্তু তাহাতে কোনও ফলোদয় না হওয়ায় তত্রত্য ডাক্তারেরা তাঁহাকে স্বদেশে গমন করিতে উপদেশ দান করিলেন। ইহার পর আনন্দী বাঈ দিন কয়েক নিজের ব্যবস্থানুসারে ঔষধ সেবন করিয়া বিশেষ উপকার লাভ করেন; কিন্তু সে উপকারও দীর্ঘকাল স্থায়ী হইল না। তাঁহার ক্ষয়কাশ রোগ হইয়াছে বুঝিতে পারিয়া গোপাল রাও ও তাঁহার হিতৈষী ব্যক্তিগণ অতীব চিন্তিত হইয়াছিলেন। কিন্তু