পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
আনন্দী বাঈ

 ১৮৮৬ খৃষ্টাব্দের ৯ই অক্টোবর আনন্দী বাঈ ও গোপাল রাও সাশ্রুনয়নে শ্রীমতী কার্পেণ্টারের শান্তি-নিকেতন পরিত্যাগ করিয়া বন্দর অভিমুখে যাত্রা করিলেন। বিদায়কালে আনন্দী বাঈ তাঁহার বান্ধবীদিগকে বলিয়াছিলেন যে, তিনি অবসর লইয়া আবার কিছু দিনের জন্য আমেরিকা পরিভ্রমণ করিতে আগমন করিবেন। আমেরিকার অনেক সজ্জন ব্যক্তি তাঁহার সহিত যেরূপ ব্যবহার করিয়াছিলেন, তাহাতে প্রকৃতপক্ষেই সেই দেশের প্রতি তাঁহার একটা স্বাভাবিক অনুরাগ জন্মিয়াছিল। তাই তিনি আমেরিকার সহিত সকল সম্বন্ধ ছিন্ন করিয়া স্বদেশে প্রত্যাবৃত্ত হইতে পারিলেন না। কিন্তু তাঁহার অন্যান্য মনোরথের ন্যায় পুনর্ব্বার আমেরিকা দর্শনের কামনাও অপূর্ণ রহিয়া গেল।

 শ্রীমতী কার্পেণ্টার তাঁহাকে জাহাজে তুলিয়া দিয়া মনঃকষ্টে গৃহে ফিরিলেন। আনন্দী বাঈ তাঁহার বিরহে অতিমাত্র দুঃখিত হইয়াছিলেন। যাত্রা-কালে দক্ষিণ চক্ষু স্পন্দিত হওয়ায় নানা দুশ্চিন্তায় তাঁহার চিত্ত ব্যাকুল হইল। তাহার উপর অর্ণবপোতের আন্দোলন। রুগ্নদেহ আনন্দী বাঈ সমুদ্রপীড়ায় অতিশয় কষ্ট পাইতে লাগিলেন। তাঁহার জ্বর, কাশি, অরুচি, দুর্ব্বলতা প্রভৃতি সমস্ত উপসর্গেরই বৃদ্ধি হইল। ১৩ই অক্টোবর রাত্রিকালে তাঁহার অবস্থা এরূপ শোচনীয় হইল যে, গোপাল রাও তাঁহার জীবনের আশা পরিত্যাগ করিলেন। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে পরদিন তাঁহার স্বাস্থ্যের সামান্য উন্নতি হইল।

 লণ্ডনে আসিয়া তাঁহাদিগকে পোত-পরিবর্ত্তন করিতে হইল।