পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অধ্যায়

গরু বাছুরে চরিয়া খাইত। যমুনা পুনঃ পুনঃ তাহা রোপণ করিয়া অধ্যবসায়ের একশেষ প্রদর্শন করিত।

 যমুনার জননী অতীব কোপন-স্বভাবা ছিলেন। তাঁহার ক্রোধ হইলে, গণপৎ রাওকেও একটু ভীত হইতে হইত। বেচারী যমুনা তাঁহার হস্তে প্রায়ই বিষম দণ্ডভোগ করিত। নিকটে প্রস্তর খণ্ড, অর্ধদগ্ধ কাষ্ঠ প্রভৃতি যাহা পাইতেন, তাহারই প্রহারে তিনি যমুনাকে জর্জ্জরিত করিতেন। একদা পাঠশালায় যাইবার নাম করিয়া যমুনা কোনও প্রতিবেশিনীর গৃহে গিয়া খেলা করিতেছিল। যমুনার জননী সেই অপরাধে তাহাকে পদাঘাত করিতে করিতে গৃহে আনয়ন করেন। তাঁহার প্রহারে বালিকা সময়ে সময়ে জ্ঞানশূন্যা হইত। যমুনাও নিতান্ত অল্প দৌরাত্ম্য করিত না। এই কারণে প্রতিবেশিনীরাও তাহাকে তিরস্কার করিতে বিরত হইত না। কিন্তু যমুনা এই সকল কঠোর শাসন অতি ধীরভাবে সহ্য করিত। সে কেবল পিতা ও মাতামহীর নিতান্ত প্রিয়পাত্রী ছিল।

 সপ্তম বর্ষ বয়সে যমুনাকে পাঠশালায় ভর্ত্তি করিয়া দেওয়া হয়। তাহার স্মরণশক্তি অতীব তীব্র ছিল। কোনও কথা একবার শুনিলে সে তাহা কখনও ভুলিত না। কিন্তু লেখাপড়ায় তাহার আদৌ মনোেযোগ ছিল না। তাহ'র পিতা তাহাকে শিক্ষকের শাসনে রাখিবার জন্যই পাঠশালায় দিয়াছিলেন। কিন্তু জোর জবরদস্তি না করিলে যমুনা পাঠশালায় যাইত না। বিদ্যালয়ে যাইবার সময় উপস্থিত হইলেই তাহার কোনও দিন পেট কামড়াইত, কোনও দিন বা অন্য কোন প্রকার অসুখ করিত। স্নেহশীলা মাতামহী সেজন্য