পাতা:আনন্দ-তুফান - প্রিয়নাথ চক্রবর্ত্তি.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সূচনা।

অতএব এখন আমাদের আপন আপন কার্য্য-সাধনে সর্ব্বান্তঃকরণে সচেষ্ট হইলে হয় না? কিন্তু, এই সময় এই কথাটী বিশেষ-রূপে স্মরণ রাখা উচিত;—যদি ‘নিজের’ কোন কার্য্য করিবার আন্তরিক ইচ্ছা থাকে, তাহা হইলে সর্ব্বাগ্রে আমাদের ‘আপনাকে’ (নিজ নিজ প্রাণ বা আত্মাকে) আপনার লৌকিক কার্য্য (মায়াবশে যে নিরর্থক কার্য্যকে ‘আপনার কার্য্য’ বলিয়া বোধ হয়, সেই কার্য্য) হইতে অবকাশ দিয়া স্বাধীন করিয়া লইতে হইবে। কারণ, প্রাণকে অবকাশ দিতে না পারিলে আমরা নিজের কার্য্য কখনই সম্পন্ন করিতে সমর্থ হইব না।

 অতএব ভাই সকল! সাবধান, যেন ‘নিজের কার্য্য’ ভুলিয়া কেবল বৃথা হাসিয়া খেলিয়াই এই অমূল্য, দুর্লভ ও অস্থায়ী অবকাশের সময় কাটিয়া না যায়! আর যাঁহার নিজের কার্য্য সমস্তই সম্পন্ন বা পূর্ণ হইয়া আছে, তিনিও সাবধান, যেন এই নিত্যানন্দময়ী দুর্গাকে পাইয়াও ‘আনন্দ’-লাভে বঞ্চিত না হন। আর ভাই মাদৃশ মানব শরীর-সম্পন্ন জীব! তুমিও সাবধান, নয়নরঞ্জিনী প্রতিমা-রূপিণী আনন্দময়ীকে মৌখিক মন্ত্র দ্বারা আবাহন করিয়া,—লৌকিক উপচার দ্বারা পূজা করিয়া,—ছাগ মেষাদি বলিদান করিয়া,—ইত্যাদি যে কোন প্রকারেই নিজ আত্মোন্নতি-সাধক কার্য্য করিতে চেষ্টা কর না কেন, ইহা নিশ্চয় জানিও যে, যতদিন না অবকাশপ্রাপ্ত প্রাণের দ্বারা ‘আবাহন’ করিয়া,—“আর বিসর্জ্জন করিব না” এই ‘সঙ্কল্প’ করিয়া, শেষে প্রাণকেই ‘পূজার উপচার’ সাজাইয়া, এবং প্রাণের শক্রগণকে (রিপুগণকে) বলিদান করিয়া, সেই প্রাণেশ্বর নিত্যানন্দময়ী