না।” পাঠান বললেন “তুমি বাঙলাতে কথা বল এতে আমার আপত্তি নেই। আমি বাঙলা একটু আধটু বলতে পারি। কিন্তু তোমার বোন আমাকে ভাল করে বাঙলা শেখায় নি সেজন্য আমি দুঃখিত। যখনই আমি কলকাতা যাই তখনই অনেক চেষ্ট্রা করে তোমার বোনের জন্য বাঙলা কেতাব কিনে আনি। তুমি ইচ্ছা করলে এসব কেতাব দেখতে পার।”
কথা বলতে বলতে লক্ষ্মী তাঁর পুস্তকের ভাণ্ডার আমার সামনে ধরলেন। দেখলাম কাশীদাসের মহাভারত, টেকচাঁদের গ্রন্থাবলী, সুরথ-উদ্ধার গীতাভিনয়, বংকিমচন্দ্রের চন্দ্রশেখর, যুগলাঙ্গুরীয়, আনন্দমঠ, বিষবৃক্ষ, লোকরহস্য, পুরাতন কএকখানা প্রবাসী এবং নব্য ভারত রয়েছে। বইগুলি দেখে মনে বেশ আনন্দ হল। বুঝতে পারলাম যদিও পাঠানের বহিঃবয়ব কর্কশ তবু অন্তর কোমল। লক্ষীকে তিনি প্রকৃতপক্ষেই অন্তরের সহিত ভালবাসেন। লক্ষ্মীকে সুখী রাখবার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে থাকেন।
লক্ষ্য করলাম, লক্ষ্মীর মনে প্রথমেই ছুৎমার্গের ভাব এসেছিল। তিনি যদিও পাঠানকে বিয়ে করেছেন তবুও তিনি মনে প্রাণে হিন্দুই আছেন। আজও তিনি অখাদ্য কিছুই খান নি। নিজেই পাঁঠা অথবা দুম্বার মাংস কিনে আনেন। মাছ যা পাওয়া যায় তার দাম বেশ সস্তা।
মাছের কথা শুনতেই আপনা থেকেই মুখে জল এল। লক্ষ্মী বললেন এক দিন মাছ রেঁধে আমাকে খাওয়াবেন। কিন্তু তত সময় অপেক্ষা করা আমার সহ্য হল না। বললাম, পরের কথা পরে হবে, এখন ঘরে যা আছে তা দিলেই খুশী হব।
আমার কথা শুনে লক্ষ্মী হেসে ফেললেন এবং পাঠানকে কি বলে বাইরে চলে গেলেন। লক্ষ্মী বাইরে চলে গেলে পাঠান বললেন স্থানীয় ইলেকট্রিক কোম্পানীতে একজন বাঙালী সাহেব কাজ করেন, তাকে অনেক দিন নিমন্ত্রণ করা হয়েছে, কিন্তু তিনি কখনও নিমন্ত্রণ রক্ষা করেন নি। লক্ষ্মী বাঙালীর সংগ পছন্দ করে, আমিও বাঙালীর সংগে মেলামেশা করতে চাই, কারণ এতে আমার