দান করে বিপদ মুক্ত হবার সুযোগ পায় নি তারা আমার আবাসস্থানে এসে দান করে যাচ্ছিল। প্রাপ্তির অংকটা বেশ মোটা রকমেই হয়েছিল। সনাতনীরা আমার পা ছুঁয়ে দান করতে আরম্ভ করল যাতে তাদের কোন লোক শীতে জমে না মরে।
শীতে জমে লোক মরে সে কথা সবাই জানে। আমাকে দশ টাকা দান করার দরুণ পূজারীর ছেলে মরে নি, তার বদলে মরেছে একটি পাঠান যে দান করেনি। এর মানে হল পর্যটককে দান করার দরুণই শীতরূপ ভূত তার ঘাড়ে না চেপে হতভাগ্য পথচারী পাঠানের ঘাড় মটকিয়েছে। অথচ কতদিন পূর্বে শীতে আমার নিজেরই কিরূপ বিপদ হয়েছিল সে কথা অনেকেই আমার মুখে শুনেছিল।
এরূপ কুসংস্কারাচ্ছন্ন হিন্দু-সমাজ সম্বন্ধে কিছুই বলব না। তবে চিন্তা করছিলাম কাবুলের হিন্দুরা সত্যিকারের পাঠান কি পাঞ্জাব থেকে নূতন করে এসেছে। সেজন্য হিন্দুদের কাছে নানারূপ প্রশ্ন করেছিলাম কিন্তু তার কোনরূপ সদুত্তর পাওয়া অন্তত এদের কাছ থেকে সম্ভব ছিল না। আফগানসরকার কোনও আদেশ দেবার সময় গোষ্টির প্রধানের নামেই আদেশ জারি করেন, সর্বসাধারণের নামে কোনও আদেশ দেওয়া হয় না। এতে দেখা যায় হিন্দুপরিবারগুলিও সমাজপতিদের আওতার মাঝেই এসে পড়ে। এখানে ধর্মের কোন কথাই ওঠে না। তুমি যে গোষ্টির লোক সেই গোষ্টির সংগে তোমাকে কাজ করতে হবে। পাঞ্জাব থেকে নবাগত হিন্দুদের কথা অবশ্য পৃথক।
বর্তমানে নবাগত ভারতবাসী আর আফগানিস্থানের নাগরিক হতে পারে না। তাদের প্রত্যেককে কুড়িদিন অন্তর পুলিশ স্টেশনে কাজকর্মের হিসাব দিয়ে আসতে হয়। আফগানিস্থানে নবাগত ভারতবাসী আর নাগরিক অধিকার না পেলেও পাঠানরা কিন্তু ভারতবর্ষে সে অধিকার হতে বঞ্চিত হয় নি। এটা মোটেই দুঃখের বিষয় নয়। একসময় আফগানিস্থান ভারতেরই অংশ ছিল।