বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৪
আফগানিস্থান ভ্রমণ

বিদ্রোহের সূচনা। বাস্তবিক, ধর্ম হল মানুষের গড়া, তার পরিবর্তন হয়েছে হবেও; সম্বন্ধ রয়েছে পরিবর্তনশীল সমাজের সংগে।

 যখন আমি মূর্তিটি পর্যবেক্ষণ করছিলাম তখন কয়েক জন লোক আমাকে দূর থেকে লক্ষ্য করছিল। আমার দেখা শেষ হয়ে গেলে পাহাড় থেকে নেমে আসার পর দর্শকগণ জিজ্ঞাসা করলেন “এই মূর্তিতে কি কিছু আছে?” এটা কি একটা ভূত? এটাকে এখনও আফগান সরকার রক্ষা করছেন কেন? এটা তত হিন্দুরও দেবতা নয়?” আমি তাদের প্রশ্নের উত্তর দেবার মত ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। শুধু বলেছিলাম “লেখাপড়া শিখুন তারপর সবই জানতে পারবেন। সে দিনের কর্মতালিকা সেখানেই শেষ করি।”

 বুদ্ধদেবের মূর্তির পাশ দিয়েই একটা বড় রাস্তা চলে গেছে। সেই পথ ধরে চলায় সময় একটি বিদ্যালয় দেখতে পেয়ে সেখানে গিয়ে শুনলাম এখানে যে-কটি বিদ্যালয় আছে তাতে উচ্চশিক্ষার বিশেষ কোন ব্যবস্থা নেই। শুধু প্রাথমিক শিক্ষাই দেওয়া হয়। কয়েকটি বিদ্যালয় বেড়িয়ে এসে বুঝলাম শিক্ষার মান এখানে বড়ই নীচু। হিন্দুদের ছেলেরা স্কুলে যায় না, তারা ঘরে বসেই লেখাপড়া করে। এটা কেন করে তা জানতে গিয়ে বুঝেছিলাম আভিজাত্য এর কারণ নয়, ইসলামধর্মের প্রতি বিতশ্রদ্ধাই তার একমাত্র কারণ। সাধারণ মজুরের ছেলের সংগে বসে লেখাপড়া শিক্ষা করাটাও ভাল নয় বলেই এখানকার হিন্দুরা মনে করে। সেটাও সাধারণ হিন্দু ছেলেদের স্কুলে না যাবার কারণ হতে পারে। আমি একদিন জনৈক হিন্দুকে বলছিলাম “ঘরে বসিয়ে শিক্ষা দেওয়ার জন্য আপনাদের ছেলেরা লোকের সংগে মেলামেশার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিদ্যালয়ে ব্যায়াম শিক্ষার সুবন্দোবস্ত আছে, সেখানেও তারা স্বাস্থ্য-চর্চার সুযোগ লাভ করতে পারত। হিন্দু ভদ্রলোক আমার প্রশ্নের জবাব দেওয়া অনাবশ্যক মনে করেন।

 আফগানিস্থানেও মধ্য-ইউরোপীয় প্রথামত ছাত্রদের পৃথক পোশাক পরতে হয়। প্রত্যেক ছেলের মাথায় ফেজ অথবা পাগড়ীর বদলে মধ্য-ইউরোপীয়