পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
আফগানিস্থান ভ্রমণ

বিরুদ্ধে পাঠানদের মনে বিদ্বেষ চিরদিন জাগরূক থাকবে, এটা নিশ্চিত। এ দৃশ্য আমি আর বেশীক্ষণ দাঁড়িয়ে দেখলাম না, গন্তব্যপথে রওনা হলাম।

 গ্রাম পার হয়েই বড় রাস্তায় আসলাম। রাস্তা প্রশস্ত। পথের একদিকে ঢালু সমতলভূমি, অন্যদিকে দুরে কৃষ্ণাভ পর্বতমালা। অনেকক্ষণ সেই দৃশ্য দেখলাম। মনে হল, পর্বত বৃক্ষরাজিতে পূর্ণ বলেই হয়তো ধোঁয়াটে দেখাচ্ছে, কিন্তু শেষে বুঝতে পারলাম আমার ধারণা সত্য নয়। এদিকের পর্বতে বৃক্ষের বড়ই অভাব। পর্বতের নিজেরই কৃষ্ণ ছায়া পড়ে পর্বতকে অন্ধকার দেখাচ্ছে।

 পর্যটকের অগ্রগতিকে মাঝে মাঝে ব্যাহত করে এই সব মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য—যাহা পথের দু’ধারে অপরূপ ঐশ্চর্যশালিনী হয়ে রয়েছে। অনেকক্ষণ সেই সৌন্দর্য দেখলাম। হঠাৎ মনে হ’ল আমি রাজপথে দাঁড়িয়ে আছি। এদিকে হোটেল নাই, খাবারের দোকান নাই—আশ্রয় নিতে হবে।

 সৌন্দর্যের মায়াপুরীর মোহ কাটিয়ে আবার চললাম বন্ধুর পথের ওপর দিয়ে সাইকেল চালিয়ে। পথ দুর্গম। কিন্তু তাই বলে কি পথ চলা বন্ধ করতে পারা যায়?

 সাত মাইল যাবার পর একটা ছোট্ট গ্রাম পেলাম। গ্রামে লোকজনের বসতি কম। গ্রাম উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত। পথের দু’পাশে মাটির ঘর। এখানে গৃহনির্মাণ-পদ্ধতি আমাদের দেশের মত নয়। আমাদের দেশে ঘরগুলি ক্রমেই পথকে গলা টিপে মারতে চেষ্টা করে, আর ওদের ঘরগুলি ক্রমেই সরে পথকে প্রসারিত করে দিচ্ছে। আর্য-সংস্কৃতির এটাই বিশেষত্ব।

 গ্রামে বেশীক্ষণ দাঁড়ালাম না, আরও এগিয়ে গিয়ে সন্ধ্যার মধ্যে জালালাবাদ পৌঁছতেই হবে। সেইখানেই রাত্রিবাস করব মনস্থ করেছিলাম। সেজন্য গ্রামটার ভেতর প্রবেশ করে অল্পক্ষণ মাত্র ঘোরাফেরা করে দেখলাম। গ্রামে লোক ছিল না। পরে শুনেছিলাম, এই গ্রামে শিয়া শ্রেণীর লোক বাস