বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
৬৭

হবে। এরূপ অবস্থায় ভেতরের কথাটা আমাকে খুলে বলাই আপনার পক্ষে ভাল হবে। আমার অনুমান হয় আপনারা সরকারী হাঙ্গামাকে এড়াবার জন্যই এরূপ করছেন। তাই যদি হয় আমি আপনাকে আশ্বাস দিয়ে বলছি, সরকারের তরফ থেকে আপনার উপর কোন বিপদই আসবে না।

 পূজারীর সংগে আর কথা হল না। ঘরে বসে থাকতেও আর ইচ্ছা হল না, শহর দেখতে বেরিয়ে পড়লাম। কাবুল শহরের বুকের উপর যে প্রসিদ্ধ রাজপথ আছে তার নাম আমি জানতাম না, এখনও জানি না। তবে পথের প্রসিদ্ধির কারণ আমাকে জানতে হয়েছিল। এই পথের ওপরই হোটেল কাবুল।

 মন্দির হতে বের হয়েই এক বৃদ্ধ পাঠানের দোকান থেকে এক প্যাকেট রাশিয়ান সিগারেট কিনিলাম। দোকানী আমার মুখের দিকে একটু তাকাল, তারপর সিগারেট দিয়ে বিদায় করল। আর একটু এগিয়ে গিয়ে একটি চা-এর দোকান দেখতে পেলাম। আমার অভ্যাসই হল চা-এর দোকানে যাওয়া এবং সেখানে বসে নানারূপ সংবাদ সংগ্রহ করা। এই দোকানটি উচ্চ শ্রেণীর ইউরোপীয় ধরনের। সুন্দর এক একটি গোল টেবিলের চারপাশে ভেলভেট মোড়া সোফা। টেবিলের ওপর ছাইদানী এবং দেশলাই ছাড়া আর কিছু ছিল না। ডিপ্লোমেটরা টেবিলের ওপর বাজে জিনিস কিছুই পছন্দ করেন না। সেজন্য মনে হচ্ছিল এটাও ডিপ্লোমেটদেরই একটা আড্ডা।

 আফগানিস্থানে দু রকমের চা-এর প্রচলন আছে, যথা—ইংলিশ চা এবং “চায়”। দার্জিলিং, সিংহল এবং আসাম হতে আফগানিস্থানে যে চা যায় তাকে ইংলিশ চা বলা হয়। ইংলিশ চা-তে দুধ এবং চিনির দরকার হয়। “চায়” আসে চীন দেশ থেকে। সেই পাতা গরম জলে ভিজিয়ে দিলেই ক্বাথ বের হয়। সেই ক্বাথকেই বলে “চায়”। এই দোকানে “চায়” এর প্রচলন ছিল না। আমি চা-এর আদেশ দিয়ে একটি সিগারেট নিয়ে ধরানোর সময় আমার গরিবানা পোশাক দেখে বয় বললে “হুজুর