বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
৬৯

এখানের চায়ের দাম খুব বেশি এবং এখানে “চায়” বিক্রি হয় না।” আমি বললাম “চা-এর যদি বেশি দাম হয় তবে কাফি নিয়ে এস। দু’কাবুলির বেশি বোধ হয় হবে না।” লোকটি বুঝল আমার কাছে টাকাপয়সা আছে। সে ফের বলল “চা আনব না। কাফি আনব হুজুর?” কাফিই নিয়ে এস—বলে পকেট হতে কতকগুলি কাগজ বের করে সে দিকে মন দিলাম। অনেক দিনের জমানো কথা ডায়েরিতে লিখতে পারি নি। এরূপ নিরিবিলি এবং এত আরামদায়ক স্থানে বসলেই লিখতে ইচ্ছা হয়। আফগানিস্থানে কাফি মোটেই ব্যবহার হয় না। তাই বয় চা আনতেই বাধ্য হল। সে চা নিয়ে এলে তার মুখের দিকে একটু ভাল করে তাকিয়ে বুঝলাম লোকটি পাঠান নয়—বিদেশী; ছদ্মবেশে এখানে আছে। পরে বুঝতে পেরেছিলাম। এই লোকটি সত্যসত্যই পাঠান নয়—সে একজন ভারতবাসী।

 এক কাপ চা খেয়ে চায়ের পিপাসা মিটাল না। ফের পুনরায় এক কাপ চা আনতে বলার পূর্বেই প্রথম কাপের দাম চুকিয়ে দিতে যাব এমন সময় বয় বলল, “এক সঙ্গে দিলেই হবে।” কথা কয়টি শুনে আশ্চর্য হলাম। একেবারে খাঁটি বাঙলা ভাষা। একজন বাঙালী এই সুদূর দেশে চায়ের দোকানে বয়ের কাজ করছে দেখে যদিও চমৎকৃত হলাম তথাপি মুখে কিছুই প্রকাশ করলাম না। বয় দ্বিতীয়বার চা নিয়ে এলে বললাম “এক প্যাকেট সিগারেট আনিয়ে দিতে পারেন?” লোকটি হঠাৎ যেন আকাশ হতে পড়ল, তারপর বলল—“আপনি কি বললেন?” আমি বললাম, “হাম বলা, ইদার মে সিগারেট মিলেগা?”

 —জরুর জনাব, পয়সা দিজিয়ে—বলেই লোকটি হাত পাতল। পাঁচটি কাবুলি মুদ্রা তার হাতে দিয়ে বললাম, এই নাও। লোকটি সিগারেট নিয়ে এল এবং বাকি পয়সা ফিরিয়ে দিল।