পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬
আফগানিস্থান ভ্রমণ

—আপনারা যাই বুঝুন, আমরা বুঝি ভারতের সর্বসাধারণ যে মিশ্রভাষা বলে তারই নাম উর্দু-মানে হল মিশ্রভাষা।

 পুলিস অফিসারে সদ্ব্যবহার দেখে হিন্দু তত্ত্ববধায়কের মনের পরিবর্তন হল। পথে এসে তিনি আমার সংগে মধুর বচনে আলাপ করলেন এবং বললেন যে পূজাৱীকে বলে কয়ে তিনি আমার আরও ভালভাবে থাকবার বন্দোবস্ত করে দেবেন। বিষ্ণু মন্দিরে এসে তিনি আমার সামনেই পোন্ত ভাষায় পূজারী ঠাকুরকে কি বললেন। দেখতে দেখতে পূজাৱী ঠাকুরেরও মনোভাবের আশ্চর্য পরিবর্তন হয়ে গেল। আমি কতকটা নিশ্চিন্ত হলাম।

 কয়েকদিন থেকে আমার স্নান হয়নি। কাবুলে আসার পর স্নানগারের সন্ধানও কারো কাছে জিজ্ঞাসা করিনি। পূজারীকে স্নানাগারের কথা জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন “মন্দিরে স্নানাগার নাই, সরকারী স্নানাগারে গেলেই সুবিধা হবে। তারপরেই বললেন, হিন্দুরা সাধারণত রাত্রিবেলাই স্নানাগারে স্নান করতে যায়, আমিও যেন তাই করি।” জিজ্ঞাসা করলাম “দিনে হিন্দুৱা স্নানাগারে যায় না কেন?” পূজারী বললেন “যায় না কেন, তা হিন্দুপ্রতিনিধিকে জিজ্ঞাসা করুন।” হিন্দুপ্রতিনিধিকে জিজ্ঞাসা করার পূর্বেই তিনি বললেন “মুসলমানের দিনে স্নান করতে যায়, আমরা যাই রাত্রে।” আমি বললাম “এই জটিল সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামাবার ফুরসৎ আমার নেই। ইচ্ছা করলে দিনের বেলাতেও স্নান করা যায়, এইটেই হচ্ছে আপনার কথার সারমর্ম নয় কি?” হিন্দুপ্রতিনিধি আমতা আমতা করতে লাগলেন দেখে চটে গেলাম। বললাম “স্নানাগারটি কোথায় দেখিয়ে দেবার জন্য একজন লোক দিলেই হবে, এখনই আমি স্নান করতে যাব।”

 পূজারীর বড় ছেলে কাছেই বসে ছিল, সে আমাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যেতে রাজি হল। আমরা উভয়ে ঘর হতে বেরিয়ে স্নানাগারের দিকে রওনা হলাম।