পাতা:আমার কথা (প্রথম খণ্ড) - বিনোদিনী দাসী.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১২
আমার কথা!

ছাপাইবার জন্য কল্পনা করেন। কিন্তু আমার কতক অসুবিধা বশতঃ হাঁ—না, এইরূপ নানা কারণে তখন হয় নাই। তাহার পর আমি মরণাপন্ন রোগগ্রস্ত হইয়া চারি মাস শয্যাগত হইয়া পড়িয়া থাকি; আমার জীবনের কোন আশাই ছিল না; শত শত সহস্র সহস্র অর্থ ব্যয় করিয়া, নানাবিধ চিকিৎসা শুশ্রূষা, দৈবকার্য্য করিয়া, প্রায় অনাহারে, অনিদ্রায় বহু অর্থ ব্যয়ে দেবতাস্বরূপ আমার আশ্রয়দাতা দয়াময় মহামহিমান্বিত মহাশয় আমায় মৃত্যুমুখ হইতে কাড়িয়া লইলেন। ডাক্তার, সন্ন্যাসী, ফকির, মোহন্ত, দৈবজ্ঞ, বন্ধু, বান্ধব সকলে একবাক্যে বলিয়াছিলেন, যে “মহাশয় সুধু আপনার ইচ্ছার জোরে (Will force) ইনি জীবন পাইলেন।” সেই দয়াময় তাঁহার ধন সম্পত্তি, তাঁহার মহজ্জীবন একদিকে; আর এই ক্ষুদ্র পাপিয়সীর কলঙ্কিত জীবন একদিকে করিয়া দারুণ ব্যাধির হস্ত হইতে আমায় রক্ষা করিলেন। আমি ব্যাধির যাতনায় বিগত নাড়ী হইয়া জ্ঞান হারাইলে, তিনি আমার মস্তকে হাত রাখিয়া স্নেহময় চক্ষুটী আমার চক্ষের উপর রাখিয়া, দৃঢ়ভাবে বলিতেন, “শুন, আমার দিকে চাহ; অমন করিতেছ কেন? তোমার কি বড় যাতনা হইতেছে? তুমি অবসন্ন হইও না! আমি জীবিত থাকিতে তোমায় কখন মরিতে দিব না। যদি তোমার আয়ু না থাকে তবে দেবতা সাক্ষী, ব্রাহ্মণ সাক্ষী,