পাতা:আমার কথা (প্রথম খণ্ড) - বিনোদিনী দাসী.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
আমার কথা!

ছিলেন। তিনি একদিন আমার মাতামহীকে ডাকিয়া বলিলেন যে “তোমাদেরও বড় কষ্ট দেখিতেছি তা তোমার এই নাতনীটিকে থিয়েটারে দিবে? এক্ষণে জলপানি-স্বরূপ কিছু কিছু পাইবে, তারপর কার্য্য শিক্ষা করিলে অধিক বেতন হইতে পারিবে।” তখন সবে মাত্র দুইটী থিয়েটার ছিল, একটী শ্রীযুক্ত ভুবনমোহন নিয়োগীর “ন্যাশন্যাল থিয়েটার” দ্বিতীয় স্বর্গীয় শরৎচন্দ্র ঘোষ মহাশয়ের “বেঙ্গল থিয়েটার”। আমার দিদিমাতা দুই চারিটী লোকের সহিত পরামর্শ করিলেন, অবশেষে পূর্ণবাবুর মতে থিয়েটারে দেওয়াই স্থির হইল। তখন পূর্ণবাবু আমাকে সুবিখ্যাত “ন্যাশন্যাল থিয়েটারে” দশ টাকা মাহিনাতে ভর্তি করিয়া দিলেন। গঙ্গাবাইজী যদিও একজন সুদক্ষ গায়িকা ছিলেন, কিন্তু লেখাপড়া কিছুমাত্র জানিতেন না; সেইজন্য আমার থিয়েটারে প্রবেশের বহুদিন পরে তিনি সামান্য মাত্র লেখাপড়া শিখিয়া কার্যে প্রবৃত্ত হন, পরে উত্তরোত্তর উন্নতি করিয়া শেষ জীবন পর্যন্ত অভিনেত্রীর কার্য্যে ব্রতী ছিলেন।

 এই সময় হইতে আমার নূতন জীবন গঠিত হইতে লাগিল। সেই বালিকা বয়সে, সেই সকল বিলাস বিভূষিত লোক সমাজে সেই নূতন শিক্ষা, নূতন কার্য্য, সকলই আমার নূতন বলিয়া বোধ হইতে লাগিল। কিছুই বুঝিতাম না, কিছুই জানিতাম না, তবে যেরূপ শিক্ষা পাইতাম,