পাতা:আমার কথা (প্রথম খণ্ড) - বিনোদিনী দাসী.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার কথা।
৩৭

মনোরমা অভিনয়ই করিতাম এবং “দুর্গেশনন্দিনীতে” আয়েষা ও তিলোত্তমা এই দুইটী ভূমিকা প্রয়োজন হইলে দুইটীই একরাত্রি একসঙ্গে অভিনয় করিয়াছি। কারাগারের ভিতর ব্যতীত আয়েষা ও তিলোত্তমার দেখা নাই! কারাগারে তিলোত্তমার কথাও ছিলনা, অন্য একজন তিলোত্তমার কাপড় পরিয়া কারাগারে গিয়া “কেও—বীরেন্দ্র সিংহের কন্যা? জগৎসিংহের মুখে এইমাত্র কথা শুনিয়া মূর্চ্ছিত হইয়া পড়িত।” আর সেই সময়েই আয়েষার ভূমিকার শ্রেষ্ঠ অংশ ওস‍্মানের সহিত অভিনয়! এই অতি সঙ্কুচিতা ভীরু স্বভাবা রাজকন্যা তিলোত্তমা, তখনি আবার উন্নত-হৃদয়া-গর্ব্বিণী। অপরিসীম হৃদয়-বলশালিনী প্রেমপরিপূর্ণা নবাব পুত্রী আয়েষা! এইরূপ দুই ভাগে নিজেকে বিভক্ত করিতে কত যে উদ্যম প্রয়োজন তাহা বলিবার নহে। ইহা যে প্রত্যহ ঘটিত তাহা নহে, কার্য্যকালীন আকস্মিক অভাবে এইরূপে কয়েকবার অভিনয় করিতে হইয়া ছিল।

 একদিন অভিনয় রাত্রিতে আয়েষা সাজিবার জন্য গৃহ ইইতে সুন্দর পোষাক পরিচ্ছদ পরিয়া অভিনয় স্থানে উপস্থিত হইয়া শুনিলাম, যিনি “আসমানির” ভূমিকা অভিনয় করিবেন তিনি উপস্থিত নাই। রঙ্গালয় জনপূর্ণ। কর্ত্তৃপক্ষগণের ভিতর চুপি চুপি কথা হইতেছে—“কে বিনোদকে ‘আসমানির’ পার্ট অভিনয় করিতে বলিবে? উপস্থিত বিনোদ ব্যতীত অন্য কেহই পারিবে না!” আমি