বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:আমার কথা (প্রথম খণ্ড) - বিনোদিনী দাসী.pdf/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার কথা!
৪৩

পড়িয়া যাই বলিয়া একজন পুরুষ মানুষ আমায় ধরিয়া রহিল। তাহার পর কত কষ্টে প্রায় আধমরা হইয়া আমরা কোন রকমে বাসায় পৌঁছিলাম। জলে শীতে আমরা এমনি অসাড় হইয়া গিয়াছিলাম, যে হাতী হইতে নামিবারও ক্ষমতা ছিল না। ছোটবাবু নিজে ধরিয়া নামাইয়া নিয়া আগুন করিয়া আমার সমস্ত গা সেঁকিতে লাগিলেন। মা তো বকিতে বকিতে কান্না জুড়িলেন। নার বুলিই ছিল “হতচ্ছাড়া মেয়ে কোন কথা শোনে না।” সেই দিনই আমাদের অভিনয়ের কথা ছিল, কিন্তু দুর্যোগের অন্য ও আমাদের শারীরিক অবস্থার জন্য সেদিন বন্ধ রহিল।

 আর একবার নৌকাতে বিপদে পড়িয়া ছিলাম—আর একবার পাহাড়ে বেড়াইতে গিয়া ঝড়ের মাঝে পড়িয়া পথ হারাইয়া পাহাড়ীদের কুটীরে আশ্রয় লইয়া জীবন রক্ষা করি! সেই পাহাড়ীই আবার রাস্তা দেখাইয়া দিয়া বাসায় রাখিয়া যায়।

 একবার কৃষ্ণনগর রাজবাড়ীতে ঘোড়ায় চড়িয়া অভিনয় করিতে পড়িয়া গিয়া বড়ই আঘাত লাগিয়া ছিল। “প্রমীলা”র পার্ট ঘোটকের উপর বসিয়া অভিনয় করিতে হইত। সেখানে মাটীর প্লাটফরম্ প্রস্তুত হইয়াছিল, যেমন আমি ষ্টেজ হইতে বাহিরে আসিব, অমনি মাটীর - ধাপ ভাঙ্গিয়া ঘোড়া হুমড়ি খাইয়া পড়িয়া গেল। আমিও ঘোড়ার উপর হইতে প্রায় দুই হস্ত দূরে পতিত হইয়া