পাতা:আমার জীবন.djvu/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার জীবন ३१ কাজ করিত । আমায় কোন কাজ করিতে হুইত না । আমার শাশুড়ী ঠাকুরাণী পাক করিতেন, আমাকে কিছু কাজ করিতে দিতেন না । আমি সকল দিবস বসিয়া থাকিতাম । ঐ গ্রামের বালিকাগণ আমার নিকটে সকল দিবস থাকিত । ঐ বাটীর চাকরাণীগণ এবং ঐ সকল বালিকা সকল দিবস আমাকে লইয়। আমোদ করিত, এবং খেলাও করিত । আমি সকল সময় একত্রে থাকিতে থাকিতে তাহাদিগের সঙ্গে আমার ভারি প্রণয় হইল । আমার পিত্রালয়ে যেমত বালিকাগণের সঙ্গে প্রণয় ছিল, ইহাদের সঙ্গেও তেমনি প্রণয় হইল । তখন আমি পুর্বের মত তত কঁাদিতাম না, তথাপি কান্না ছিল ; কিন্তু কিছু কম পড়িল । আমাকে কেহ কোন কাজ করিতে দিতেন না, আমি সকল দিবস নিরর্থক বসিয়া থাকিতাম, আর মনে মনে ভাবিতাম, আমি কি কাজ করিব । সংসারের সমুদয় কাজ তো চাকরাণীতেই করে, ঘরের কাজে আমার শাশুড়ী ঠাকুরাণী আছেন, র্তার উপরে চাকরাণীও আছে । তখন মেয়েছেলেকে লেখাপড়া শিখাইত না । আমি কি কাজ করিব, কিছুই পাই না । এখনকার মত পয়স তখন ছিল না, সে সময় কেবল কড়ি ছিল, ঐ কড়িতেই সকল কারবার চলিত ; আমি ঐ কড়ি আনিয়া নানাবিধ জিনিস তৈয়ার করিতে আরম্ভ করিলাম। ঝাড়, পদ্ম, আরসী, ছত্র, আলনা, ছিকা এই সকল বানাইয়া ঘরে লটকাইয়া রাখিতাম । আর পাথর কাটিয়া ক্ষীরের ছাচ করার জন্য সঞ্চ বানাইতাম, পাট দিয়া ছিকা বানাইতাম ; মাটি দিয়া পুতুল, ঠাকুর, মুছি, সাপ, বাঘ, শিয়াল, কুকুর, বিড়াল, মানুষ, গরু এবং পক্ষী ইত্যাদি যা দেখিতাম তাহাই বানাইতাম । এক দিবস মাটির এক সাপ বানাইয়া তাহার গায়ে রং দিয়া সাজাইয়া ঘরের মধ্যে থাটের নীচে রাখিয়াছিলাম, সে সাপ বানাইতে কেহ দেখে নাই । পরে ঐ সাপ দেখিয়া একজন লোক গিয়া বাহির বাটীর কাছারীর সকল লোককে ডাকিয়া আনিল । মাটির সাপ দেখিয়া সত্য জ্ঞান করিয়া মারিতে চেষ্টা করিল। কেহ বা লাঠি হাতে, কেহ বা সড়কি লইয়। ঘরের আড়ার উপর উঠিল, কেহ বা