পাতা:আমার জীবন.djvu/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার জীবন 8 X কাহার সঙ্গে কথা কহি না, অধিকন্তু আমাকে যদি কেহ ছুটী কটু বাক্য বলে, তাহা হইলে আমি মৃতপ্রায় হইব ; এই ভয়ে আমি কাহার নিকটও কথা কহিতাম না । কেবল দিবারাত্র পরমেশ্বরকে ভাকিয়া বলিতাম, পরেমেশ্বর ! তুমি আমাকে লেখাপড়া শিখাও, আমি নিতান্তই শিখিব । তুমি যদি না শিখাও, তবে আর কে শিখাইবে । এইরূপে মনে মনে সর্বদ বলিতাম । এই প্রকারে কতক দিবস যায় । এক দিবস আমি নিদ্রাবেশে স্বপ্ন দেখিতেছি,—আমি যেন চৈতন্যভাগবত পুস্তকখানি খুলিয়া পাঠ করিতেছি । আমি এই স্বপ্ন দেপিয়৷ জাগিয়া উঠিলাম । তখন আমার শরীর মন এককালে আনন্দরসে পরিপূর্ণ হইল। আমি জাগিয়াও চোখ বুজিয়া বার বার ঐ স্বপ্নের কথা মনে করিতে লাগিলাম, আর আমার জ্ঞান হইতে লাগিল, আমি যেন কত অমূল্য রত্বই প্রাপ্ত হইলাম । এই প্রকার আলাদে আমার শরীর মন পরিতুষ্ট হইল । আমি মনে মনে ভাষিতে লাগিলাম, কি আশ্চর্য ! এ চৈতন্যভাগবত পুস্তক আমি কখনও দেখি নাই এবং আমি ইহা চিনিও না ; তথাপি স্বপ্নাবেশে সেই পুস্তক আমি পাঠ করিলাম। আমি মোটে কিছুই লিখিতে পড়িতে জানি না, তাহাতে ইহা ভারী পুস্তক । এ পুস্তক যে আমি পড়িব, ইহা কোনমতেই সম্ভব নহে। যাহা হউক, আমি যে স্বপ্নে এ পুস্তক পড়িলাম, ইহাতে আমি কৃতকৃতার্থ হইলাম । আমার জীবন সফল হইল। আমি পরমেশ্বরের নিকটে সমস্ত দিনই বলিয়া থাকি, আমাকে লেখাপড় শিখাও, পুথি পড়িব । সেইজন্ত পরমেশ্বর লেখাপড়া না শিখাইয়াই স্বপ্নে পুথি পড়িতে ক্ষমতা দিয়াছেন। ইহা আমার বড় আহ্নাদের বিষয়, পরমেশ্বরকে ধন্যবাদ । আমার জন্ম ধন্ত, পরমেশ্বর আমার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করিয়াছেন । আমি এই প্রকার ভাবিয়া ভারি প্রফুল্লচিত্তে থাকিলাম । আমি মনে মনে ভাবিতে লাগিলাম, শুনিয়াছি, এই বাটতে অনেক পুস্তক আছে, তাহার মধ্যে চৈতন্যভাগবত পুস্তকও থাকিলে