পাতা:আমার জীবন.djvu/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

303 আমাব জীবন এমন ছাপার অক্ষর ছিল না । সে সকল হাতের লেখার অক্ষর পড়িতে ভারি কষ্ট হইত। আমার এত দুঃখের পড়া । বস্তুতঃ আমি এত কষ্ট করিয়া পডিতে শিখিয়াও তাহ লিখিতে শিথিলাম না । বিশেষতঃ লিখিতে বসিলে তাহার অনেক আয়োজন লাগে, কাগজ, কলম, দোয়াত চাহি । তাহ লইয়া ঘটা করিয়া সাজাইয়া বসিতে হয়। আমি একে তো মেয়ে, তাহাতে বউ মামুখ, মেয়েমানুষকে লেখাপড় শিখিতেই নাই । এটি স্ত্রীজাতির পক্ষে প্রধান দোষ বলিয়া সকলে সিদ্ধান্ত করিয়া রাখিয়াছেন । সে স্থলে আমি এ প্রকার সাজিয়া লিখিতে বসিলে লোকে আমাকে দেখিয়া কি বলিবে । বাস্তবিক আমাকে কেহ কটবাক্য বলিবে বলিয়া আমার অত্যন্ত ভয় ছিল । এইজন্য আমি লেখার বিষয় ক্ষান্ত দিয গোপনে গোপনে কেবল পণ্ডিতাম । আমি যে ঐ সকল পুস্তক পড়িতে পারিব, সে কথাটি আমার চিত্তের অগোচর । বিশেষতঃ এমন তাবস্থায় লেখাপড “হওয়া কোনমতেই সম্ভব নয় । তবে যে যৎকিঞ্চিৎ শিথিযাছি, .স যেন পরমেশ্বর নিজে আমার হাত ধরিয়া শিখাইয়াছেন, এই মত আমার জ্ঞান হইত। আমি যে একটুকু পডিতে পারিতাম, তাহাতেই আমার মন মগ্ন হইয়া থাকিত, আর লেখার কথা মনেও করিতাম না । সপ্তম রচনা কোথা রৈলে দীননাথ ওহে দয়াময় । হের দুঃখিনীর দুঃখ হইয়া সদয় ॥ করুণাসাগর পিতা করুণানিধান । এ দুঃখ সাগর হতে কর পরিত্রাণ ॥ বিষয় বিষেতে মোর জেগেছে হৃদয় । তোমারে ভুলিয়া আছি কি হবে উপায়। অনাথ নিতান্ত আমি কে করে সাজন । তোমা বিনা কে জানিবে মনের যন্ত্রণ ॥