পাতা:আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস.pdf/১৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

; లిథ আমার বোম্বাই প্রবাস এই ত ইংরাজদের সিন্দুবিজয় কাহিনী। স্পষ্ট দেখা যায় যে স্যর চালর্স নেপিয়র পূর্ব্ব হইতেই দেশ দখল করিবার আশয়ে কার্য্যারম্ভ করেন—আমীরদের সঙ্গে তাহার যে বিবাদ তাহ মেষদলের সহিত ব্যান্ত্রের বিবাদের অনুরূপ। তাছার নিজ হস্তাক্ষর হইতেই তাহার মনোগত অভিপ্রায় অবগত হওয়া যায়। তিনি স্পষ্টাক্ষরে লিখিয়া গিয়াছেন— “আমীরদের দমন করিবাব জন্ত আমরা কেবল একটা ছুতে চাই । যে রাজ্য দুর্ব্বল সে শীঘ্রই হউক, বিলম্বেই হউক বলবানের গ্রাসে পতিত হইবেই হইবে, তাহার উপায় স্তর নাই ।” তাহার নীতিশাস্ত্রে সৎকার্য্যসিদ্ধির নিমিত্তে অসৎ উপায় যোজনা দোষের নহৈ । কথিত আছে যে সিন্ধুবিজয়ের পর তিনি দেশে তাবযোগে দ্ব্যর্থভাবে সংবাদ পাঠান "I have Sind” ( Sinned ) এই তিনটি বাক্যে সিন্ধুবিজয় কাহিনী অভিব্যক্ত । সিন্ধু দেশ ব্রিটিষ পরিবারের নবোঢ়া বধূ, এদেশ ব্রিটিষ রাজ্যভুক্ত হবাব পর এখনে শতাব্দী অতিবাহিত হয়নি। ম্যাপে দেখলে এ প্রদেশ বোম্বাই প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত মনে হয় না, মনে হয় যেন পঞ্জাবেরই অঙ্গ । মধ্যে মধ্যে সিন্ধু দেশ পঞ্জাবে যোগ করবারও প্রস্তাবও শোনা যায় কিন্তু বোধ করি সিন্ধিদেব তা ইচ্ছা নয়—তারা বোম্বাই গবর্ণমেণ্টের অধীনে মুখে আছে। এদেশের ভাষা সিন্ধি ; গুজরাটীর সঙ্গে সোসাদৃশ্য দেখা যায় । সংস্কৃতই এ সকল ভাষার অদ্য জননী । কিন্তু আশ্চর্য্য এই যে সিন্ধি লিখনপদ্ধতি উর্দ, সংস্কৃতমূলক নয়। অক্ষর অনায়াসে দেবনাগরী হতে পারত। সিন্ধিভাষায় যতগুলি বর্ণ আছে তা নাগবীতে সহজে লিপিবদ্ধ করা যেতে পারে । যে দুএকটা বর্ণের একটু আলাদা উচ্চারণ তাৰ মাথায় কোনরূপ রেপ বা বিন্দু দেওয়া ; আমরা বাঙ্গলায় যেমন বিন্দু দিয়ে ’ড’ ও ‘ড়'র প্রভেদ নির্দেশ কবি সেইরূপ কোন রকম সঙ্গেতিক চিহ্ন ব্যবহার কবলেই হয়। এখন জিজ্ঞাস্ত এই, তবে কেন নাগরীর বদলে উর্দ, বর্ণমালা চলিত হল ? তার উত্তর এই—সরকারের হুকুম। যখন ইংরাজের সিন্ধু দেশ অধিকার করেন, তখন সেখানে লেখাপড়ার চর্চা ছিল না। বণিকদের হিসাবপত্রে একপ্রকার নাগরীর অপভ্রংশ ব্যবহৃত হত, তাছাড়া বর্ণীক্ষবের প্রচার ছিল না। যখন ব্রিটিষ আদালত সকল স্থাপিত হল তখন কোর্টের একটা ভাষা ঠিক করা আর তার সঙ্গে অক্ষরের স্বষ্টি করা আবশ্যক হয়ে পড়ল। এ সঙ্কটে গবর্ণমেণ্টের কর্তৃপুরুষের পারস্ত বর্ণমালা গ্রহণ করাই যুক্তিসিদ্ধ বিবেচনা করেন। তাদের আদেশক্রমে আদালতে উর্দ্দলিপির ব্যবহার আরম্ভ হয়, ক্রমে তাই আদালত হতে অষ্টান্ত স্থানে প্রচলিত হল। সিন্ধি গ্রন্থাবলী এক্ষণে উর্দ অক্ষরেই লিখিত হয়ে থাকে।