পাতা:আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস.pdf/২২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার বোম্বাই প্রবাস ১৬৫ ১৬৮৯ সালে রাজকুমার আজম সোলাপুর আক্রমণ করিয়া বিজাপুরবিজয় যুদ্ধ 'আরম্ভ করেন। সোলাপুর হস্তগত হইলে তিনি বিজাপুরের উপর গিয়া পড়েন কিন্তু সে আক্রমণে বিলক্ষণ বাধা পড়িল। মোগলদের আগমনে বিজাপুরের লোকেরা কলহ বিবাদ দলাদলি সব ভুলিয়া ঐক্যবন্ধনে মিলিত হইল। বিজাপুর সৈন্তের প্রতিঘাতে মোগলের বিপদগ্রস্ত হইয়া ভীম নদীর উত্তরে হটিয়া গেল। বর্ষ শেষে আজম পুনর্ব্বার সৈন্তসহ প্রত্যাগত হইলেন । এবার বিজাপুর সেনাগণ আর এক কৌশল অবলম্বন করিল। তাহার সীমাস্তে মোগলদের প্রতিরোধ না করিয়া রাজধানী মধ্যেই বল সঞ্চিত রাখিয় তাহদের প্রতীক্ষা করিয়া রহিল। এইরূপ আচরণের সুফল আপনা হইতেই ফলিল। বিজাপুরের উত্তবাঞ্চলে ধান্ত শস্ত জলের অভাব—অত বড় মোগল সৈন্তের আহার যোগানো বিষম দায়। সোলাপুর হইতে তাহদের সকল আহার সামগ্রী সংগ্রহ করিতে হইত—এদিকে বিজাপুরের অশ্বারোহীদল অন্নবাহক লোকদের কাটিয়া ফেলে-- মহ! উৎপাত ! অবশেষে আহমদনগর হইতে অনেক কষ্টে এক বোঝাই ধান্ত আমদানী হওয়ায় মোগল সৈন্ত রক্ষা পায়। ইত্যবসরে সম্রাট স্বয়ং রঙ্গভূমিতে অবতীর্ণ হইলেন। তখন হাইদ্রাবাদের বিরুদ্ধে তিনি যুদ্ধের আয়োজন করিয়াছিলেন—তাহ কোনমতে তালিতুলি দিয়া শেষ করিয়া সসৈন্ত যুদ্ধ যাত্রায় বাহির হইলেন। আসিয়া দেখেন যে র্তাহার পুত্র আজমের সৈন্ত বিজাপুর একপ্রকার ঘিরিয়া দাড়াইয়াছে—সে সৈন্তের যে সমস্ত অভাব ছিল তাহার আগমনে তাহ দূৰ হইল। সহরের দক্ষিণে প্রাচীর-ভেদযোগ্য কামানসজ্জা প্রস্তুত হইল ও তাহার বলপ্রয়োগে প্রাচীর স্থানে স্থানে শীঘ্রই ক্ষত বিক্ষত হইয়া পড়িল। তিনি দেখিলেন সম্মুখযুদ্ধের প্রয়োজন নাই—ভিতরে অন্নকষ্টেই কার্য্যোদ্ধার হইবার সম্ভাবনা । ‘সবুরে মেওয়া ফলে এই বাক্য স্মরণকরত: পরিণাম প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন। তাহার মনোরথ অবিলম্বে সিদ্ধ হইল। অন্নাভাব যেমন দিন দিন বাড়িতে লাগিল, বাধা দিবার ক্ষমতাও সেই পরিমাণে কমিয়া আসিল। ১৬৮৬ খৃষ্টাব্দে ১৫ই অক্টোবরে নগরপালের হার মানিয়া সম্রাটের চরণে আত্মসমর্পণ করিল। ঔরঙ্গজেব তাহার আমীর ওমরাও এবং প্রধান প্রধান সৈনিক সহচরে পরিবৃত হইয়া মহাসমারোহে বিজিত বিজাপুরে প্রবেশ করিলেন। প্রজাবর্গের বিলাপধ্বনির মধ্যে আর্ক কেল্লার গগন-মহলে উপনীত হইয়া প্রধান প্রধান সর্দারদের নজরান গ্রহণ করিলেন। অভাগা সেকন্যর বিজিত রাজার স্তায় সম্মানিত হওয়া দূরে থাকুক, বন্দীকৃত বিদ্রোহীর দ্যায় রজতশৃঙ্খলে সম্রাট সমক্ষে সমানীত হইলে সম্রাট তাহকে বসিবার আসন ও অভয় বচনে সাত্বনা দিয়া তাহার এক লক্ষ টাকা বার্ষিকী বধিয়া দিলেন । ইহার কয়েক বৎসর পরে সেকনার লোকান্তরে গমন করেন। তাহার