পাতা:আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস.pdf/৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 আমার বোম্বাই প্রবাস মেয়েদের গুজরাট ধবণের সাড়ী। পারসী মেয়েদের সাড়ী আমাদের বেশ পছন্দ হ’ল—তাই একটু আধটু পবিবর্তন করে আমবা একরকম আমাদেব সাড়ীর মত করে নিলুম, তাছাড়া মাথাব ওড়ন। সে আমাদের নিজস্ব জিনিস। এই বেশ ক্রমে বাঙ্গাল দেশে ভদ্রসমাজে প্রচলিত হয়ে পড়েছে। আশ্চর্য্য এই যে গোড় হিন্দু-পরিবারের মেয়েবাও এই পরিচ্ছদ গ্রহণ করতে এখন সঙ্কুচিত নন—এটা খুবই মুখের বিষয় বলতে হবে । মারাঠী স্ত্রীদের বেশভূষা ঠিক আমাদেব মেয়েদের ধরণের নয়। মারাঠী স্ত্রীগণ মাথায় কোনরূপ আবরণ-বস্ত্র ব্যবহাব করেন ন-খোলা মাথায় চক্রাকার খোপা, তার উপব ফুলের মালা ও স্বর্ণ ভরণ । ন’কে মুক্তাগুচ্ছ নথ। মারাঠী মেয়েদেব সাড়ী পরবাব ধরণ একটু আলাদ ; সাড়ী, তবে উপর আবার মাল-কোচা । সামনেব দিকটা দেথতে মন্দ দেখায় না, পিছনে মালকেচার বঁধন স্পষ্ট ধরা পড়ে। মেয়েদেব এ পুরুষবেশ আমাদের চক্ষে অদ্ভুত ঠেকে,-কিন্তু পরিচ্ছদ-পরিধান রুচি অনেকটা অভ্যাসের উপর নির্ভর। এক কাল ছিল যখন মাৰাঠ বীরাঙ্গনাদের অশ্বারোহণে সৈন্তসহ এক স্থান হ’তে স্থানান্তবে যাতায়াত করতে হ’ত, তখনকার কালের পক্ষে মালকোচাই উপযুক্ত বেশ। বোম্বাইয়েল হিন্দু স্ত্রীদের একটি অঙ্গাবরণ আমার বেশ পছন্দ হয়-ও-দেশে তাহাকে চোলী’ বলে, আমরা বলি কাচুলী। কি মারাঠী কি গুজরাটী সব মেয়েই এই চোলী ধাবণ করে। গুজরাটী মেয়েব যেভাবে সাড়ী পরে, আমরা কিঞ্চিৎ পরিবর্তন করে সেই ধরণে আমাদের মেয়েলী পোষাক প্রস্তুত করে নিলুম। পারসী রমণীগণ গুজরাট মেয়েদের মত রেশমী সাড়ী পরে, কেবল মাথায় একটা রুমাল জড়িয়ে রাখে। পাবসীদের জাতীয় পরিচ্ছদ সদরী’ ও ‘কস্তী” । সদর একটা মলমলের জাম, আর কস্তী বাহাত্তর স্থতার কটিবন্ধ, প্রত্যেক জরতোস্তীর ইহা পরিধেয়। জন্দাবস্তায় সদর মুভদ্র মঙ্গল বসন বলিয়া ব্যাখ্যাত । কস্তী কটিদেশে তিন-ফের জড়িয়ে চার গ্রন্থিতে বাধা হয়। প্রত্যেক গ্রন্থি ৰাধবার সময় এক এক মন্ত্র উচ্চারণ করতে হয়। প্রথম মন্ত্র, ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয় ; দ্বিতীয়, জরতোস্ত ধর্ম্মই সত্য ; তৃতীয়, জরতোস্ত ঈশ্বরের দূত ; চতুর্থ, সদাচরণ করিবে এবং পাপকর্ম্ম পরিহার করিবে । এই চার মন্ত্র পাঠের পর সদর ও কস্তী পরিধান করে পারসী মানবক জরতোস্ত ধর্ম্মে দীক্ষিত হয়। শুধু মানবক কেন, পারসী স্ত্রীপুরুষ উভয়েই এই দীক্ষা গ্রহণ করে ।