পাতা:আমার বাল্যকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আ মা র বা ল্য ক থা
৩৯

শান্তিনিকেতন

শান্তিনিকেতন, শান্ত সুশোভন,
সুভদ্র হরিত ক্ষেত্র শ্যামাকান্ত নিভৃত কানন।
বিমল শোভায়, সরোবর ভায়,
নভসীর বনশ্রীর স্বচ্ছ দরপণ।

 আমি যে পণ্ডিতের নিকট সংস্কৃত অধ্যয়ন করতুম বড়দাদা তার কাছে পড়তেন না,— তাঁর সংস্কৃত অধ্যাপক ছিলেন রামনারায়ণ পণ্ডিত, ‘বহুবিবাহ’ নাটক রচয়িতা। তাঁর শিক্ষাগুণে বড়দাদা সংস্কৃতকাব্যে শীঘ্রই ব্যুৎপত্তি লাভ করেছিলেন। সংস্কৃত পদ্যে একটি কলিকাতা বর্ণনা আছে সে তাঁর সেই সময়কার রচনা। তার কয়েকটি শ্লোক আমার যা মনে আছে তা এই:—

কলিকাতা

ইংরাজ রাজরাজ্যং যৎ ত্রিলোকীতলবিশ্রুতং
রাজধানীং সুবিস্তীর্ণাং কলিকাতাং বিভর্ত্তি তৎ।
পয়ঃ পূরপ্রবাহিন্যা গঙ্গয়া পুণ্যসঙ্গয়া
কলিকাতা পুরী ভাতি নিত্যং মেখলিনীব সা।

রথা রম্যাঃ সুগম্যাশ্চ যত্র ভান্তি সহস্রশঃ
দৃতিপাত্রগলদ্বারি-নিবারিতরজশ্চয়া
শতঘ্নীশতযুক্তেন দুর্গেণ দুর্গ হারিভিঃ
উদ্যৎ বিদ্যুৎপ্রভাজাল সৈন্যশস্ত্রাস্ত্রশোভিনা।

ত্রিলোক বিশ্রুত এই ইংরাজ রাজ্যের মাঝে
সুবিস্তীর্ণা রাজধানী কলিকাতা কিবা সাজে।
পূর্ণকায়া পুণ্যতোয়া জাহ্নবী বহিয়া যায়,
তারি অঙ্গে কলিকাতা মেখলিনীসম ভায়।
সুরম্য সুগম্য যথা শতপথ ব্যাপি রয়,
চর্মপাত্র গলদ্বারি ধূলিরাশি নিবারয়।