পাতা:আমার বাল্যকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬
আ মা র বা ল্য ক থা

ব্যবস্থা তাঁর মনঃপূত হল না, তার স্থায়িত্বের প্রতি সন্দিহান হলেন তখন সেখানকার দান উঠিয়ে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান-কলেজ সংস্থাপন উদ্দেশে নূতন দান ব্যবস্থা করলেন—সামান্য দান নয় স্থাবর সম্পত্তি মিলে সাড়ে সাত লাখ টাকারও উপর। দানপত্রের ব্যবস্থা দু কথায় এই যে, প্রস্তাবিত বিজ্ঞান-কলেজে— পদার্থবিদ্যা ও রসায়নবিদ্যা এই দুই বিদ্যায় দুইটি আসন প্রতিষ্ঠিত হবে—এই প্রথম। দ্বিতীয়, ইহাও বিশেষরূপে উল্লেখযোগ্য যে এই শিক্ষাকার্যে দেশীয় লোকেরাই অধ্যাপকের পদে নিযুক্ত হবেন। যদি তাঁদের যোগ্যতা অর্জনের নিমিত্ত বিদেশে শিক্ষালাভ করা আবশ্যক হয় তাহলে এই ব্যবস্থা-পত্রের কর্তৃপক্ষদের বিবেচনায় যাহা ধার্য হয় সেইরূপ শিক্ষা দিবার ব্যবস্থা করা হবে। কিছুদিন পূর্বে এই নিয়মগুলি লিপিবদ্ধ ও দানপত্র গঠিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সমর্পিত হয়েছিল। সম্প্রতি আবার প্রায় আরও আট লক্ষ টাকার বিষয় তিনি লেখাপড়া করে সেনেটের হাতে সমর্পণ করেছেন। এই শুভ কার্য সুসম্পন্ন করে এখন তিনি নিরুদ্বিগ্ন মনে তাঁর শেষ দিন প্রতীক্ষা করে রয়েছেন, ভৃত্য যেমন মাসের শেষে আপনার বেতন প্রতীক্ষা করে থাকে—“কালমেব প্রতীক্ষেত নির্দ্দেশং ভৃতকো যথা।”

 এই বিরাট দান উপলক্ষে য়ুনিবারসিটির Vice-Chancellor মহোদয় বলেছেন:—“প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ, প্রসন্নকুমার ঠাকুর, গুরুপ্রসন্ন ঘোষ, দ্বারবঙ্গাধিরাজ প্রভৃতি মহাত্মাগণ বিশ্ববিদ্যালয়ে লাখো লাখো টাকা দান করিয়া আমাদের গৌরবের পাত্র হইয়াছেন সত্য কিন্তু তারকনাথ পালিত মহাশয় তাঁর দুই অসামান্য বদান্যতাগুণে আর সকলকে পরাস্ত করিয়া এই দাতৃমণ্ডলীর শীর্ষস্থানীয় হইয়া রহিলেন।”

 ছেলেবেলা থেকেই তারকনাথ পালিত তেজস্বী, এইখানে তাঁর বাল্যকালের তেজস্বিতার একটি পরিচয় প্রদান করি। আমরা দুই বন্ধু প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে মেডিকেল কলেজে কেমেস্ট্রীর লেকচার