পাতা:আমার বাল্যকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আ মা র বা ল্য ক থা
৮১

বল্লেন (মৃদুমন্দভাবে) “ওঃ তুমি বই আননি—তা পাশের ছোকরার বই দেখে পড়।”

 ছেলেরা যখন ভারি গোল করছে কিছুতেই বাগ মানে না তখন তিনি তাদের থামাবার একটি বিচিত্র উপায় অবলম্বন করতেন। নানা রকম মুখভঙ্গী করে কেদারা থেকে উঠে বোর্ডে খড়িতে বড় বড় অক্ষরে লিখতেন Silence! Silence! Silence! চুপ চুপ চুপ! তার পর চৌকিতে বসে বলতেন, “এখন কে গোল করবে করুক দেখি!”

 আমরা বিদ্যাশিক্ষার প্রণালী অনেক রকম শুনতে পাই, ওবিষয়ে নানা মুনির নানা মত— কিন্তু রামমিত্রের শিক্ষাপ্রণালী সম্পূর্ণ নূতন, আর কারো সঙ্গে তার তুলনা হয় না। দু-একটি নমুন। দিচ্ছি:—

 পৃথিবী গোল কি করে মনে রাখতে হয়? রসগোল্লা খেতে খেতে তার গোলাকার ধ্যান করা।

 ভুগোল শেখার সহজ উপায় কি? স্টুয়ার্টের জিওগ্রাফিখানি ২০ আনা মুখস্থ করা— লেখার সময় চার আনা ভুলে গেলেও—১৬ আনা মনে থাকবে।

 Composition ভাল লিখতে হয় কি করে? ভাল ভাষায় প্রকৃতি বর্ণনা করিতে গেলে সুশীতল সমীরণ এই দুটি কথা লিখতে হবে। তবে যেখানে সাধুভাষা মনে না আসে সেখানে ‘ঠাণ্ডা বাতাস' বসিয়ে দেবে। কলসের স-টা কোন্ স যদি মনে না থাকে তাহলে সেখানে ‘ঘট’ শব্দটা ব্যবহার করলেই ল্যাটা চুকে যাবে। ইত্যাদি ইত্যাদি।

 একবার পরীক্ষা দেবার সময় কোন ছাত্র তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিল—মশায় এই বইটার কোন্ কোন্ অংশ ভাল করে দেখে রাখা চাই, আমাকে বলে দিন!

 উত্তর—(খানিকক্ষণ চিন্তা করিয়া)

 Mark the first page! Mark the second page!!