পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

রচিত হয়েছে তাতে অনেক অত্যাচার, অনেক দুর্নীতি, অনেক সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ, অনেক স্বৈরাচারী শাসক, অনেক রক্তপাত, অনেক হত্যা বহমান। তা সত্ত্বেও আশ্চর্যজনকভাবে অনুপস্থিত পৃথিবীকে এইসব 'পাপ' থেকে মুক্ত করতে অবতারের ভূমিকা।

 সমাজ সচেতনতার সঙ্গে ইতিহাসে চোখ রাখলে বরং এটাই স্পষ্ট হয়ে ওঠে, অবতার-পয়গম্বররা শাসক ও শোষকশ্রেণীর স্বার্থরক্ষার কাজেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সাহায্য করে চলেছে। অসাম্য-অবিচার-দুর্নীতি-শোষণের সমাজ কাঠামোর স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে সাহায্য করে চলেছে।

 একবার ভাবুন তো, শোষিত মানুষ অসাম্য, শোষণ ও দুর্নীতির সমাজ পাল্টাবার দায়-দায়িত্ব ঈশ্বর-অবতারদের উপর চাপিয়ে দিয়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে কী হবে? শোষিত মানুষের অলীক চিন্তার সুযোগ নিয়ে অসাম্য, শোষণ ও দুনীতির সমাজ কাঠামো নিরুপদ্রবে তার স্থিতাবস্থা বজায় রাখবে।

 ইতিহাস এ কথাই বলে, যে সব দেশের মানুষ সাম্যের সমাজ গড়ার লক্ষ্যে সমাজকে পাল্টে দিয়েছিল (হতে পারে এই পাল্টানো ছিল সাময়িক। সাংস্কৃতিক আন্দোলনের গুরুত্ব অনুধাবনে নেতৃত্বের অক্ষমতার দরুন সাম্য-চিন্তা স্থায়ীকরণের প্রক্রিয়া ধাক্কা খেয়েছিল, ভিতরে ভিতরে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল ক্ষমতালোভী ঘুণ পোকাদের অবাধ দংশনে), সে'সব দেশের মানুষ ঈশ্বর ও অবতারদের হাতে সমাজ পাল্টাবার ভার সঁপে না দিয়ে নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছিল বলেই সাফল্য পেয়েছিল।

O

শোষিত মানুষ অসাম্য, শোষণ ও দুর্নীতির সমাজ পাল্টাবার দায়-দায়িত্ব ঈশ্বর-অবতারদের উপর চাপিয়ে দিয়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে কী হবে? শোষিত মানুষের অলীক চিন্তার সুযোগ নিয়ে অসাম্য, শোষণ ও দুর্নীতির সমাজ কাঠামো নিরুপদ্রবে তার স্থিতাবস্থা বজায় রাখবে।

O

 চূড়ান্ত সাফল্য পেতে, শোষণের শৃঙ্খল ভেঙে সাম্যের সুন্দর সমাজ গড়তে, নিপীড়িত মানুষকেই নামতে হবে সংঘর্ষে ও নির্মাণে। ঈশ্বর-অবতার- পয়গম্বরদের উপর নির্ভরশীলতাকে বিসর্জন দিয়েই নামতে হবে জয়কে ছিনিয়ে নিতে।

O

শোষণের শৃঙ্খল ভেঙে সাম্যের সুন্দর সমাজ গড়তে, নিপীড়িত মানুষকেই নামতে হবে সংঘর্ষে ও নির্মাণে। ঈশ্বর-অবতার-পয়গম্বরদের উপর নির্ভরশীলতাকে বিসর্জন দিয়েই নামতে হবে জয়কে ছিনিয়ে নিতে।

O

১২৫