পাতা:আমি শুধু একা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাবিত্রী ভিতরে চলে গেল । সাবিত্রী সুলেখাদির সামনে থেকে সরে এসেছে নিভৃতে তাদের এই বাড়িতে। ও একা থাকতে চায় কি দিন । এখানে এসে মায়ের চােখে ওই পরিবর্তনটাকে লুকোতে পারে নি। মা শুধোয়--- কি রে শরীর খারাপ নাকি? সাবিত্রীর সারা মনে যেন ঝড় বইছে। --না ! সাবিত্রী এড়িয়ে থাকতে চায়। তবু মায়ের মনের উৎকণ্ঠােটাকে ভোলাতে পারে না। মা তার সম্বন্ধে অনেক কিছুই হয়তো ভাবে। ভয়ও হয় মায়ের মনে । সাবিত্রী মা-বাবার মধ্যে ওই কথাগুলোও শুনেছে। ওরা সাবিত্রীকে বিয়ে দেবার নাম করে অন্য কারো ঘাড়ে তার দায়-দায়িত্ব চাপিয়ে নিজেরা নিষ্কৃতি পেতে চায়। আজ সাবিত্রী যেন অনেক জটিল সমস্যার মধ্যেই পড়েছে। আর সেই ভাবনাগুলো বেঁচে থাকার ভাবনার চেয়েও অনেক জটিলতর, এটা তার মনের অণুপরমাণুতে একটা আলোড়ন এনেছে। কাজলবাবু হঠাৎ আজ তার সামনে কি বিচিত্র রূপে এসে তার মনের সব সুরগুলোকে কি প্রাণসম্পদে ভরিয়ে তুলেছে। এই পাওয়ার স্বাদ তার জানা ছিল না। —সেই সংগ্রামী সাবিত্রী আজ চমকে উঠেছে। কাজলবাবু আবার তার জীবনে ধীরে ধীরে ফিরে আসছে, সেই স্বপ্নদেখা দিনগুলোর কথা মনে পড়ে। সাবিত্রী চুপ করে এঘরের তক্তপােষের ওপর বসে আছে। সন্ধ্যার অন্ধকার নেমেছে। মা বলে-আজ আর যেতে হবে না বাছা। আর যাবার কি উপায় আছে ? দিন কাল কি যে হল ? ওই শোন! অন্ধকারে কোথায় দূরে কাছে, দু একটা বোমার শব্দ ওঠে। তীক্ষা কৰ্কশ স্বরে পাইপগানের গুলির শব্দ শোনা যায়। সুধাময়ী বাইরের দিকে চেয়ে থাকে। এ বাড়ির মানুষটা-অমৃত এখনও ফেরে নি। S ove)