পাতা:আমি শুধু একা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-< | অন্ধকারে বসস্তবাবু ওই ডাকটা শুনেছেন। ওই কণ্ঠস্বরে মিশিয়ে আছে তার জীবনের অনেক কোমল স্মৃতি, অনেক স্বপ্নসােধ। সাবিত্রী এগিয়ে আসছে ও যেন তার সামনে এনেছে। আশার আলো। ওই আলোর দিকে হাতড়ে হাতড়ে । বসন্তবাবু এগিয়ে যেতে চান। হঠাৎ মনে হয় তার সামনে অন্ধকার কেঁপে কেঁপে উঠল, সারা শরীরে একটা দুঃসহ বেদনা।-চােখের সামনে গাঢ় অন্ধকার গাঢ়তার হয়ে ওঠে। কোথাও কোন স্পন্দন নেই। তারাগুলো ঝাপসা হয়ে হারিয়ে গেল। শূন্যে দু'হাত তুলে আছড়ে পড়লেন বসস্তবাবু! সব আশ্বাস, মুক্তির স্বাদ তমসার অতলে মুছে গোল নিঃশেষে । !li>[[&۔۔۔۔۔۔ অন্ধকারে এগিয়ে আসছে সাবিত্রী। সামনে দিয়ে ওই লোকগুলো মিলিয়ে গেলগাড়ীটাও এরই মধ্যে চলে গেছে কোন ফাকে। সাবিত্রী অস্ফুট আর্তনাদ করে ওঠে। অন্ধকারে তারাগুলোর স্নান আলোয় ঠাওর হয় বসস্তবাবু রাস্তায় পড়ে আছেন। ব্যাকুল আবেগে সাবিত্রী দু’হাত দিয়ে ওকে নাড়া দিতে গিয়ে চমকে ওঠে, রক্তে জায়গাটা ভিজে গেছে, ওরা দুহাতে তাজা উষ্ণ রক্তের স্পর্শ জাগে। অস্ফুট আর্তনাদ করে ওঠে সাবিত্রী। ও ডাকছে, নাড়া দেয় প্রাণহীন রক্তাক্ত দেহটাকে । ওর আর্তনাদ রাতের অন্ধকারে সাড়া তোলে। সাবিত্রীর খেয়াল নেই, সে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে। কারা এগিয়ে আসছে, লোকজন হবে বোধহয় । সাবিত্রী স্বপ্নবিষ্ট চোখে দেখছে ওই দেহটাকে। কি দুঃসহ আর্তনাদে সে ভেঙে পড়ে, কঁদছে একটি অসহায় মেয়ে। তার চোখের সামনে সব হারানোর দুঃসহ বেদনা গাঢ়তার হয়ে উঠেছে। দিনের আলোর সাড়া জাগে, এ রাতেরও শেষ হয়ে সকাল আসে। ওই এদে বাড়িটার মানুষগুলো স্তব্ধ হয়ে গেছে। এতদিনের সব স্বপ্ন বেঁচে থাকার চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেল বসন্তবাবুর জীবনে। Nò, 8 d