পাতা:আমি শুধু একা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হঠাৎ থমকে দাঁড়ালো অমৃত। রেডিওতে সুর উঠছে—বর্ণময় আনন্দঘন জীবনের সুর। —অসীম প্রাণের যে হিল্লোলে জোয়ার ভাঁটায় জীবন দোলে। সাবিত্রী গাইছে। ওর কষ্ঠে ফুটে উঠেছে মহান একটি সত্যের রূপময় সুর। বাইরে আশ্বাস ও হারায় নি। তুচ্ছ পাওয়ার সীমা ছাড়িয়ে কোন মহাজীবনকে যেন স্পর্শ করেছে সে। সেই তৃপ্তির আশ্বাস ওর সুরে সুরে ফুটে ওঠে। আকাশ ভবা সূর্য তারা বিশ্ব ভরা প্রাণ তাহারি মাঝখানেশুদ্ধ অমৃত রাত্রের আলোজুলী মহানগরীর পথে দাঁড়িয়ে আজ এই মুহূর্তে নতুন করে নিজেকে প্রত্যক্ষ করেছে। অনেক হারিয়ে-অনেক ঠকেও মানুষ বেঁচে আছে। কর্মচঞ্চল জীবনপ্রবাহের অতলের ছন্দধারার মত বেদনার চিরন্তন মালিন্যকে ভুলে সেও বাঁচবে। তারা বেঁচে আছে। রাত্রি সেই তারার আলোর ইশারা দেখে নি। অমৃত আজকের সব বেদনাকে ছয়ে ছুয়ে কোন আলোকরেখার সন্ধান করে। অমৃত সাবিত্রী ওরা বেঁচে আছে। বাঁচবে সব আঁধারের পরেও। সুরটা কি গভীর তৃপ্তিতে ওর মনকে ভরে তোলে। সাবিত্রী ব্যর্থ হয় নি। নিবিড় অন্ধকারে চলেছে। ওরা সকলেই নিঃসঙ্গ পদাতিকের মত কোন চিরন্তন আলোর সন্ধানে । SWed