পাতা:আমি শুধু একা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রজনীও বসে আছে, দূরে অন্ধকারে ট্রেনের আলোটা জেগে ওঠে- মাটি কাঁপছে গুরু গুরু শব্দে, পাশের রেল লাইনে মৃদু শব্দটা ক্রমশ বাড়ছে আগত ঝড়ের শব্দের V5 ট্রেনটার তীব্র সন্ধানী আলো-আঁধার ফুড়ে কঠিন শাসনের ভঙ্গীতে এগিয়ে আসছে। ওদের দিকে। প্রতিটি মুহূর্ত ওদের ধমনীতে শিহর আনে। তাদের উপর নির্ভর করছে অনেক কােজ বড় দায়িত্ব। —বসন্তদা, অস্ফুট কণ্ঠে যেন আর্তনাদ করে ওঠে রজনী। এই উত্তেজনায়, সে শিউরে উঠেছে। কঁপিছে রজনী। ওর মুখের চেহারা বদলে গেছে। চরম মুহূর্তে ও কি দুঃসহ আতঙ্কে বিবর্ণ হয়ে কঁপিছে—ওর সব শক্তি ফুরিয়ে আসে। KMM --এ্যাই! বসন্ত ধমকে ওঠে। ওর কাধে একটি থাবড়া মেরে গর্জন করে চাপা। স্বারে-স্টেডি রজনী। এ্যাকসন! বসন্ত ওকে সাহস দেয়। ট্রেনটা এসে পড়েছে, আলোর তীব্র উজ্জ্বলতা ওদের চোখ ধাঁধিয়ে দেয়, চেনও টানা হয়েছে। চাকায় চাকায় ভ্যাকুয়াম ব্রেকের ঘর্ষণে ফিনকি দিয়ে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ বের হয়-ছিটিয়ে পড়ে প্রবল বেগে। ওই কঠিন ইস্পাতের চাকায় চাকায় অগ্নিবৃষ্টি হচ্ছে। গাড়িটা প্রচণ্ড শব্দে আর্তনাদ করে থামছে। অন্ধকারে কয়েকটা ফায়ারিং-এর শব্দ ওঠে। আকাশ-বাতাস কঁাপিয়ে যাত্রীদের ভয় দেখায় তারা { — গেট আপ। রজনী । চার্জ! ভয়কঁপা ছেলেটাকে কি প্রচণ্ড প্রাণশক্তি দিয়ে আচ্ছন্ন করেছে বসন্ত। ছায়ামূর্তির দল হানা দিয়েছে ব্রেক-ভ্যানে। প্রচণ্ড আঘাতে দরজাটা খুলে যায়। হ'কচাকিয়ে ওঠে বসন্তবাবু একটা শব্দে। ঝকঝকে গাড়িখানা এসে থামতেই দরজা খুলে বের হয়ে আসছেন রজনীবাবু! পরাণে খন্দরের পাঞ্জাবী, হাতে একটা ফোলিও ব্যাগ। অফিসের রূপ বদলে গেছে নিমেষের মধ্যে } ধেয়ারা ঘুমন্ত অবস্থাতেই যেন টুল ছেড়ে উঠে পড়েছে। বাবুদের মধ্যেও সাড়া পড়ে যায় । ՀԳ