পাতা:আয়ুর্ব্বেদ-শিক্ষা (প্রথম খণ্ড) - অমৃতলাল গুপ্ত কবিভূষণ.pdf/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\9. আয়ুর্বেদ-শিক্ষা বা কাসের বিকৃতি হইতে শ্বাস, ইত্যাদি উপদ্রবের উৎপত্তি হয়, একটী নষ্ট হইলে অন্য উপদ্রব স্বয়ং হ্রাস পাইতে থাকে, এমতাবস্থায় যে সকল উপদ্রব অন্য উপদ্রবের কারণ স্বরূপ, সেই সকল উপদ্রবকেই প্রথমে নষ্ট করা কর্ত্তব্য, সাধারণতঃ যাহাতে বায়ু অনুলোম হয়, অগ্নিবল ক্রমশঃ বৃদ্ধিপায় ও কোষ্ঠগুদ্ধি থাকে, এরূপ ঔষধ সন্নিপাতজরে প্রয়োগ করা। কর্ত্তব্য, কিন্তু বিরেচক ঔষধ দ্বারা কোষ্ঠীশুদ্ধি নিতান্ত গহিত । বক্ষঃস্থলস্থিত শ্লেষ্মা যাহাতে শুষ্ক হইতে না পারে অর্থাৎ তরল ভাবে মুখ হইতে বা অধোগামী হইয়া নিঃসৃত হয় তাহার ব্যবস্থা করা। কর্ত্তব্য। সন্নিপাতজরে মল ও মূত্র রোধ হওয়ায় সহসা উদারাত্মান বা অকস্মাৎ জ্ঞান শূন্যতা, মূৰ্ছা ও উন্মত্তত প্রভৃতি উপদ্রধ অনেক স্থানেই দৃষ্ট হয়, অনেকস্থানে রোগীর শ্বাস ক্রিয়ার সময় সময় লোপ ও নাড়ীর গতির বিপর্য্যয়, শরীর শীতল ও জড়পদার্থবৎ ইত্যাদি লক্ষণ সকলও দেখিতে পাওয়া যায় ; কিন্তু সেই সকল অবস্থায় চিকিৎসক অধীর হইলে রোগীর অমঙ্গল হইতে পারে, সুতরাং চিকিৎসক ধৈর্য্য অবলম্বন পূর্বক চিকিৎসা করিলে অনেক স্থানে নিরাশ রোগীও রোগমুক্ত হইতে পারে, সন্নিপাতজরের উপদ্রব নষ্ট করিতে না পারিলে কেবল জরের ঔষধ প্রয়োগ দ্বারা বিশেষ কোন উপকার হয় না । ঐ সকল অবস্থায় অনেক সময় রোগীর নিকট উপস্থিত থাকিয়া মনোযোগ সহকারে রোগার বাহ লক্ষণ ও নাড়ীর গতি পর্য্যালোচনা করা উচিত এবং অৰ্দ্ধ ঘণ্টা বা এক ঘণ্টা অন্তর' উপদ্রব অনুসারে ঔষধ সমূহ রোগীকে সেবন করিতে দেওয়া কর্ত্তব্য, অনেকস্থানে চিকিৎসকের বিবেচনার অভাবে এবং অনেকস্থানে উপযুক্ত ঔষধের অভাবে রোগীর মৃত্যু হয়, উপদ্রব সমূহের সম্যক বা আংশিক অবস্থা পর্য্যালোচনা পূর্বক ঔষধের ব্যবস্থা করিয়া রোগীকে সেবন করান কর্ত্তব্য। উদরাত্মান, সংজ্ঞাহীনতা, নাড়ীর বিশৃঙ্খলতা, শ্বাসবেগ ও হিমাঙ্গতা, অনেক সময় একই রোগীতে যুগপৎ দৃষ্ট হয় ; ইহার কারণ উল্লেখ করিতে হইলে গ্রন্থের আয়তন বৰ্দ্ধিত হয় ; এই জন্য কারণের উল্লেখ না করিয়া কেবল চিকিৎসাবিষয়ক সামান্য উপদেশ এস্থলে বর্ণিত হইল। সাধারণতঃ সন্নিপাতজরে প্রথমে কফনিবর্ত্তক রুক্ষস্বেদাদি প্রয়োগ করিয়া, পশ্চাৎ ঘায়ু ও পিত্তের প্রতিকার করিবে। কিন্তু বিকার উপস্থিত হইলে যে দোষ প্রধান দেখিবে, তাহার চিকিৎসা করিবে ।