Se8 আরণ্যক বলিলাম-আমি এখানকার কাছারির কর্ম্মচারী । --আপনি কি ম্যানেজার বাৰু? -কেন বল ত ? তোমার কোন দরকার আছে ? হঁবা, আমিই ম্যানেজার লোকটা উঠিয়া আমার দিকে আশীর্ব্বাদের ভঙ্গিতে হাত তুলিল। বলিলহুজুর, আমার নাম মটুকনাথ পাড়ে। ব্রাহ্মণ, আপনার কাছেই যাচ্ছি। --কেন ? --হুজুৰ, আমি বড় গরিব । অনেক দূর থেকে হেঁটে আসছি। হুজুরের নাম শুনে। তিন দিন থেকে হাটছি। পথে পথে। যদি আপনার কাছে চলাচলতির কোন একটা উপায় হয় আমার কৌতুহল হইল, জিজ্ঞাসা করিলাম-এ ক'দিন জঙ্গলের পথে তুমি कि 6थझ थiछ ? মটুকনাথ তাহার মলিন চাদরের একপ্রান্তে বাধা পোয়াটাক কলাইয়ের ” ছাতু দেখাইয়া বলিল-সেরখানেক ছাতু ছিল এতে বাধা, এই নিয়ে বাড়ী থেকে বেরিয়েছিলাম। তাই ক’দিন খাচ্ছি। রোজগারের চেষ্টায় বেড়াচ্ছি, হুজুরআজ ছাতু ফুরিয়ে এসেছে, ভগবান জুটিয়ে দেবেন। আবার । আজমাবাদ ও নাঢ়া বইহারের এই জনশূন্য বনপ্রান্তরে উড়ানির খুটে ছাতু বঁাধিয়া লোকটা কি রোজগারের প্রত্যাশায় আসিয়াছে বুঝিতে পারিলাম না । বলিলাম-বড় বড় শহর ভাগলপুর, পূর্ণিয়া, পাটনা, মুঙ্গের ছেড়ে এ জঙ্গলের মধ্যে এলে কেন পাড়োজী ? এখানে কি হবে ? লোক কোথায় এখানে, তোমাকে দেবে কে ? মটুকনাথ আমার মুখের দিকে নৈরাশ্যপূর্ণদৃষ্টিতে চাহিয়া বলিল-এখানে fি রোজগার হবে না বাৰু ? তবে আমি কোথায় যাব ? ও-সব বড় শহরে আ, কাউকে চিনি নে, রাস্তাঘাট চিনি নে, আমার ভয় করে । তাই এখানে যাচ্ছিলামলোকটাকে বড় অসহায়, দুঃখী ও ভালমানুষ বলিয়া মনে হইল । সঙ্গে করিয়া কাছারিতে লইয়া আসিলাম।
পাতা:আরণ্যক - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৬
অবয়ব