পাতা:আরণ্যক - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

टांझopक See কয়েকদিন চলিয়া গেল। মটুকনাথকে কোন কাজ করিয়া দিতে পারিলাম --দেখিলাম, সে কোন কাজ জানে না।--কিছু সংস্কৃত পড়িয়ছে, ব্রাহ্মণগাণ্ডিতের কাজ করিতে পারে । টোলে ছাত্র পড়াইত, আমার কাছে বসিয়া *भा অসময়ে উদ্ভট শ্লোক আবৃত্তি করিয়া বোধ হয় আমার অবসরবিনোদনের চষ্টা করে । একদিন আমায় বলিল-আমায় কাছারির পাশে একটু জমি দিয়ে একটা টোল খুলিয়ে দিন হুজুর। বলিলাম-কে পড়বে টোলে পণ্ডিতজী, বুনো মহিষ ও নীলগাইয়ের দল কি ভট্ট বা রঘুবংশ বুঝবে ? i মটুকনাথ নিপাট ভাল মানুয়-বোধ হয় কিছু না ভাবিয়া দেখিয়াই টোল খুলিবাব প্রস্তাব করিয়াছিল। ভাবিলাম, বুঝিয়া এবার সে নিরস্ত হইবে । কিন্তু দিন-কতক চুপ করিয়া থাকিয়া আবার সে কথাটা পাড়িল । বলিল-দিন দয়া ক’রে একটা টোল আমায় খুলে । দেখি না চেষ্টা ক’রে কি হয়। নয়ত আর যাব কোথায় হুজুর ? ভাল বিপদে পড়িয়াছি, লোকটা কি পাগল! ওর মুখের দিকে চাহিলেও দয়া হয়, সংসারের ঘোরাপেচ বোঝে না, নিতান্ত সরল, নির্ব্বোধী ধরণের মানুষ-অথচ একরাশ নির্ভর ও ভরসা লইয়া আসিয়াছো-কাহার উপর কে জানে ? তাহাকে কত বুঝাইলাম, আমি জমি দিতে রাজি আছি, সে চাষবাস করুক, যেমন রাজু পাড়ে করিতেছে। মটুকনাথ মিনতি করিয়া বলিল, তাহারা বংশানুদ্রুমে শাস্ত্রব্যবসায়ী ব্রাহ্মণ-পণ্ডিত, চাষকাজের সে কিছুই জানে না, জমি লইয়া • করিবে ? তাহাকে বলিতে পারিতাম শাস্ত্রব্যবসায়ী পণ্ডিত-মানুষ এখানে মরিতে আসিয়াছ কেন, কিন্তু কোন কঠিন কথা বলিতে মন সক্সিল না। লোকটাকে বড় ভাল লাগিয়াছিল। অবশেষে তাহার নির্বন্ধতিশয্যে একটা ঘর বঁাধিয়া দিয়া বলিলাম। এই তোমার টোল, এখন ছাত্র যোগাড় হয় কি না দেখি ।