আর একবার রাজকুমারী ভানুমতীর সহিত দেখা হইয়াছিল। সে এক বাটি মহিষের দুধ লইয়া আমাদের জন্য দাড়াইয়া ছিল রাজবাড়ীর ধারে।
এক দিন রাজু পাড়ে কাছারিতে খবর পাঠাইল যে বুনো শুওরের দল তাহার চীনা ফসলের ক্ষেতে প্রতি রাত্রে উপদ্রব করিতেছে, তাদের মধ্যে কয়েকটি দাত ওয়ালা ধাড়ী শুওরের ভয়ে সে ক্যানো পিটানো ছাড়া অন্য কিছু করিতে পারে মা-কাছারি হইতে ইহার প্রতীকার না করিলে তাহার সমুদয় ফসল নষ্ট হইতে বসিয়াছে।
শুনিয়া নিজেই বৈকালের দিকে বন্দুক লইয়া গেলাম। রাজুর স্কুটার ও জমি নাঢ়া-বইহারের ঘন জঙ্গলের মধ্যে। সেদিকে এখনও লোকের বসবাস হয় নাই, ফসলের ক্ষেতের পত্তনও খুব কম হইয়াছে, কাজেই বন্য জন্তুর উপদ্রব বেশী।
দেখি রাজু নিজের ক্ষেতে বসিয়া কাজ করিতেছে। আমায় দেখি কাজ ফেলিয়া ছুটিয়া আসিল। আমার হাত হইতে ঘোড়ার লাগাম লইয়া নিকটের একটা হরীতকী গাছে ঘোড়া বাধিল।
বলিলাম—কই রাজু, তোমায় যে আর দেখি নে, কাছারির দিকে যাও না রাজুর খুপরির চারি দিকে দীর্ঘ কাশের অঙ্গল, মাঝে মাঝে কেঁদ ও হয়ীতকী গাছ। কি করিয়া যে এই জনশূন্য বনে সে একা থাকে। এ জঙ্গলে কাহারও সহিত দিনান্তে একটি কথা বলিবার উপায় নাই—অদ্ভুত লোক বটে।
রাজু বলিল—স মস্থ পাই কই যে কোথাও যাব হজুর, ক্ষেতের ফসল চৌকি দিতেই প্রাণ বেরিয়ে গেল। তার ওপর মহিষ আছে।
তিনটি মহিষ রাইতে ও দেড়-বিঘা জমির চাষ করিতে এত কি ব্যস্ত থাকে