পাতা:আরণ্যক - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ठोंक 8 ܘ ܓ সেখানে স্নান করে। আমরা আমলাতলীর পাহাডের নীচে কলাই কাটছিলাম, পূর্ণিমার যোগ পড়লো কি না ? মঞ্চী নাইতে গেল ক্ষেতের কাজ বন্ধ রেখে । আমার সেদিন জ্বর, আমি নাইবো না। বডবোঁ তুলসীও গেল না, ওর তত ধর্ম্মের বাতিক নেই। মঞ্চী সূরষ-কুণ্ডে নামতে যাচ্ছে, পাণ্ডারা বলেছে-এই, ওখানে, কেন নামচিস ? ও বলেছে।--জলে নাইবো । তারা বলেছে।--তুই কি জাত ? ও বলেছে-গাঙ্গোতা। তখন তারা বলেছে-গাঙ্গোতীনকে আমরা নাইতে দিই। নে কুণ্ডের জলে, চলে যা । ও তো জানেন তেজী মেয়ে। ও বলেছে-এ তো পাহাড়ী ঝরণা, যে সে নাইতে পারে। ঐ ত কত লোক নাইছে। ওরা কি সকলে ব্রাহ্মণ আর ছাত্রী ? ব’লে যেমন নামতে গিয়েছে, দু-জন ছুটে এসে ওকে টেনে হিঁচডে মারতে মায়তে সেখান থেকে তাড়িয়ে দিলে । ও কঁদিতে কঁাদিতে ফিরে এল । --তার পর কি হ’ল ? --কি হবে বাবুজী ? আমরা গরিব গাঙ্গোত কাটুনি মজুর। আমাদের ফরিয়াদ কে শুনবে। আমি বলি, কঁাদিস নে, তোকে আমি মুঙ্গেরের সীতাকুণ্ডে নাইয়ে আনবো । মঞ্চী বলিল-বাবুজী, আপনি একটু লিখে দেবেন তো কথাটা ? আপনাদের বাঙালী বাবুদেৱ-কলমের খুব জোর। পাজিগুলো জব্দ হয়ে যাবে। উৎসাহের সহিত বলিলাম-নিশ্চয়ই লিখবো । তাহার পর মর্থী পরম যত্নে আমায় খাওয়াইল । বড় ভাল লাগিল তাহার एवंश & ८ ।। বিদায় লইবার সময় তাহাকে বার-বার বলিলাম-সামনের বৈশাখ মাসে যব গম কাটুনির সময় তারা যেন নিশ্চয়ই আমাদের লবটুলিয়া-বইহারে যায়। মঞ্চী বলিল-ঠিক যাব বাবুজী । সে কি আপনাকে বলতে হবে ? মর্থীর আতিথ্য গ্রহণ করিয়া চলিয়া আসিবার সময় মনে হইল, আনন্দ, স্বাস্থ্য ও সারল্যের প্রতিমূর্ত্তি যেন সে। এই বনভূমির সে যেন বনলক্ষ্মী, পরিপূর্ণযৌবনা, প্রাণময়ী, তেজস্বিনী অথচ মুখা, অনভিজ্ঞা, বালিকাস্বভাবা।