ধাওতাল সাস্থ মহাজনের কাছে আমাকে একবার হাত পাতিতে হইল। আদায় সেবার হইল কম, অথচ দশ হাজার টাকা রেভিনিউ দাখিল করিতেই হইবে। তহসিলদার বনোয়ারীলাল পরামর্শ দিল, বাকী টাকাটা ধাওতাল সার কাছে কর্জ করুন। আপনাকে সে নিশ্চয়ই দিতে আপত্তি করিবে না। ধাওতাল সাহু আমার মহালের প্রজা নয়, সে থাকে গবর্ণমেণ্টের খাসমহালে। আমাদের সতে তার কোন প্রকার বাধ্যবাধকতা নাই, এ অবস্থায় সে যে এক কথায় আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে হাজার-তিনেক টাকা ধার দিবে, এ বিষয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ ছিল।
কিন্তু গরজ বড় বালাই। একদিন বনোয়ারীলালকে সঙ্গে লইয়া গোপনে গেলাম ধাওতাল সাহুর বাড়ী, কারণ কাছারি অপর কাহাকেও জানিতে দিতে চাহি না যে টাকা কর্জ করিয়া দিতে হইতেছে।
ধাওতাল সাহুর বাড়ী পওসদিয়ার একটা ঘিঞ্জি টোলার মধ্যে। বড় একখানা খোলার চালার সামনে থানকতক দড়ির চারপাই পাতা। ধাওতাল সাই উঠানের এক পাশের তামাকের ক্ষেত নিড়ানি দিয়া পরিষ্কার করিতেছিলআমাদের দেখিয়া শশব্যস্ত ছুটিয়া আসিল, কোথায় বসাইবে, কি করিবে ভাবিয়া পায় না, খানিকক্ষণের জন্যে যেন দিশাহারা হইয়া গেল।
- একি! হুজুর এসেছেন গরীবের বাড়ী, আন, আসুন। বন হুজুর। আসুন তহসিলদার সাহেব।
ধাওতাল সাহুর বাড়ীতে চাকরবাকর দেখিলাম না। তাহার একজন হৃষ্টপুষ্ট নাতি, নাম আমলখিয়া, সে-ই আমাদের জন্য ছুটাছুটি করিতে লাগিল। বাড়ীঘর আসবাবপত্র দেখিয়া কে বলিবে ইহা লক্ষপতি মহাজনের বাড়ী।
রামলখিয়া আমার ঘোড়র পিঠ হইতে জিন খুরপাচ খুলিয়া ঘোড়াকে ছায়ায়