কেশব বলে, ব্যাগটা একজনের মাথায় ধরে রাখতে হবে ভুবনন্দ । ভুবন বলে, সারাদিন ধরেই তো আছি ভাই । কেউ তো এল না । একজন নার্শ রাখব ভাবছি। কিন্তু টাকা নেই, কি করি । বাড়াটা বাধা দেব ভাবছি। শরতের কাছে ।
ললন নানা সুরে গান গায় । মোহিনীর কাতরানির সুরটা একঘেয়ে, কিন্তু এমন ধারালো যে প্ৰাণের মধ্যে যেন কেটে কেটে বসে। মোহিনী ছটফট করে বিড়বিড় করে বকে যায়। কে দেখবে তার অপরূপ দেহের ছটফটানি, কে শুনবে তার বিকারের
কথা ?
ভুবন হঠাৎ তাড়াতাড়ি আইস ব্যাগটা মোহিনীর মাথায় চেপে ধরে কিন্তু রাগে গা যেন জ্বলে যায় কেশবের ।
বিকারের ঘোরে মোহিনী সিনেমার কথা বলছে । সিনেমা দেখতে যাওয়ার কথা নয়, সিনেমায় অভিনয় করতে যাওয়ায় কথা ।
জড়ানো অস্পষ্ট হলেও মোহিনীর কথা মোটামুটি বুঝতে কষ্ট হয় না। বার বার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দু'টি মনের কথাই সে জ্বরের ঘোরে প্রকাশ করছে ।
আর সব কথা তুচ্ছ হয়ে গেছে তার কাছে। একজন সারাদিনরাত ঘরে বসে তাকে পাহার দেবে । কাজে বেরোবে না, পয়সা রোজগার করবে না, শুধু তাকে পাহারা দেবে! চারিদিকে পিপড়ে গিজ গিজ করছে কিনা তাই গুড়ের ভাড়টি
পাহারা দেবে ।
সিনেমায় ঢুকবেই সে এবার-কেন ঢুকবে না ? শুধু একটা দিন চান করে এলো চুলে পুজোর থালা হাতে মন্দিরে যেতে হবে, সেজন্য কতগুলি টাকা দেবে বলেছে। পরে আরও কত ছবিতে নামাবে
o
পাতা:আরোগ্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৫
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন
অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
