পাতা:আরোগ্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জেগেছিল অথবা সংসার করার সাধ জাগায় মেয়েটাকে পছন্দ হয়েছিল। ঠিক করে বলা যায় না। কানু প্রায় বছরখানেক চেষ্টা করছে, কিন্তু মেয়ের বাপ রাজী নয়। মেয়েকে, একটা ধেড়ে মিস্ত্রীর হাতে সে কিছুতেই দেবে না। তার আসল আপত্তি অবশ্য এই নয় যে কানুর একটু বয়স হয়েছে। বেলাও তো কচি খুকীটি নেই। আসল কথা দোকানে কাজ করলেও সে হল ভদ্রলোক, কানু স্রেফ মজুর। এতদিনে কানুর ধৈর্য্য শেষ হয়েছে 7ি মায়ের পছন্দ করা যেমন হোক একটা মেয়েকে বিয়ে করে এবার সে সংসারী হবেই। কথা কইতে কইতে সন্ধ্যা হয়ে আসে। কানু মাতাল নয়, মদ খাওয়া অভ্যাস দাড়ায়নি, কিন্তু মাঝে মাঝে যেদিন খায় সেদিন নেশা করার জন্যই খায়। মদ খেতে বসে কেশবের মত ছিটে-ফোটা একটু মালে একরাশি সোডা মিশিয়ে খাওয়ার পালা শেষ করার ধাত তার নয় । শেষ পর্য্যন্ত বেলাকে বাতিল করার সিদ্ধান্ত করে মন বোধ হয়। ভাল নেই, আজ বেশ খানিকট গিলবে মনে হয়। সন্ধ্যা হতে হতে নেশা জমে আসে কানুর । সে বলে, চল না একটু ফুর্ত্তি করি ? কেশব বলে, বেশ বাবা তুমি, দুদিন বাদে বিয়ে করে সংসারী হবেকানু এক গাল হেসে বলে, তবে যাব না। যা । আরও খানিকটা হৈ-চৈ করে ঘুমোব।

তুই খা । আমি গেলাম। মদ খায় না বলে গর্ব বোধ করেন কেশব । বেশী খেতে ভয় করে তাই খায় না। এতে আর বাহাদুরী কিসের ? বরং উল্টোটাই বলা যায়। দু’এক চুমুক খেলে একটু সতেজ মনে হয় নিজেকে ।

RN)