পাতা:আরোগ্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদ্যোগী পুরুষ, ব্যস্ত মানুষ। ললনার হৃদয় জয় করতে তার একটু অশোভন তাড়াহুড়া দেখা যায় । বোবা হাবা তো নয়। তার টাকা আর প্রভাব প্রতিপত্তিই যে আসল কথা এটা সে জানে। একজন সাধারণ তরুণ যে ধৈর্য্য। আর অধ্যবসায়ের সঙ্গে প্রিয়ার বিমুখী মনটা নিজের দিকে ফেরাবার তপস্যা করবে। সেভাবে অগ্রসর হয়ে তার কোন লাভ নেই। ওভাবে কোন মেয়ের মন জয় করবার আশা সে রাখে না । মন তাকে কিনতেই হবে। তবে এই মনটা তো আর বানাৎ করে টাকা ফেলে কিম্বা সুযোগ সুবিধা বাগিয়ে দেবার কথা দিয়ে কেনা যাবে না । একটু সামাজিক তোড়জোড়ও দরকার। দিনে তিনচার বার ফোন করে । যখন তখন আসে । দু’চার মিনিট গল্প করে । বলে, একটা গান শোনাও না ? অন্য কেউ হলে ললনা হয় তো বলত, এখন তো গাইতে পারবন । কিন্তু বঙ্কিম শুনতে চাইলে অসময়েও গান শোনাতে হয়। বাপের দিকটা খেয়াল রাখতে হয় তাকে । বঙ্কিমের অনেক ক্ষমতা । সিনেমা দেখাতে নিয়ে যায়। বঙ্কিম দুটো বিশেষ সম্মানজনক নিমন্ত্রণের পাশ পায়। সঙ্গে যাবার জন্য ললনাকে নিমন্ত্রণ জানায় । মাঝে মধ্যে শুধু বন্ধুর সঙ্গে ছাড়া কারো সঙ্গে ললনা সিনেমায় যায় না.। কিন্তু বঙ্কিমের কথা আলাদা । মা বলে, তুই যে এভাবে সিনেমায় যাচ্ছিাস, সবাই তো দেখছে ? কেশবের সামনেই বলে। তৈরী হয়ে সে যখন গাড়ীতে উঠতে যাবে, । বঙ্কিম অবশ্য তার গাড়ী পাঠাতে চায় ৷ ললনা কারণ করে।