পাতা:আরোগ্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেশব তাকে অ্যাদির করে বলে, তুমি ভুল বুঝেছি। ভেবে দেখি মানে আমি অন্য উপায়ের কথা ভাবছি। ঃ সত্যি ? দুষ্ঠাখো, গায়ে আমার কঁাটা দিয়েছে। কি উপায় বল না ?

আগে ভাবি, তারপর বলব। মাথাটা ভেঁাতা হয়ে আছে । : ইস। আমি মরলে তোমার অসুখটা যদি সারিত ! শুনে কেশবের রোমাঞ্চ হয় না বটে কিন্তু সে বিশ্বাস করে মায়ার এসব মন ভুলানো বানানো কথা নয়। সমস্ত দায় আর ঝঞ্চাট এড়িয়ে তার সঙ্গে নিরালা একটি নীড়ে প্রকাশ্যভাবে নিশ্চিন্ত মনে বাস করার আশাতেই হয় তো সে এভাবে এসব কথা বলে । তাকে উস্কিয়ে দিতে চায় যে গভীর রাতে এভাবে চোরের মত কিছুক্ষণের জন্য তাকে পাওয়ার বদলে ব্যবস্থা করলেই চব্বিশ ঘণ্টা সে তাকে আপন করে পেতে পারে-এজন্য ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার কলঙ্কও সে বরণ করতে রাজী আছে। কিন্তু এতে ছলনা চাতুরীর কথা নয়। সে নিজেরও সুখ আর সার্থকতা চায়-সেটা কি অপরাধ মানুষের ? নিজেকে সে তো বিনা সর্ত্তে সাপে দিতে চায় নিন্দ কলঙ্ক তুচ্ছ করে, সমাজ আর আইনের স্বীকৃতি না পেয়েও তার সঙ্গে নিজস্ব একটি, নীড় বঁধার আশায় ।

সন্তান সে চাইবে না । সে জানে এ জীবনে সন্তান শুধু তার বিড়ম্বনাই হবে। এতদিনের অভ্যস্ত সামাজিক জীবনও সে চাইবে না । কয়েকদিন আগেও গোবিন্দের ভাই-এর মেয়ের বিয়েতে তাকে সাদরে সমাদরের সঙ্গে নেওয়া হয়েছিল। সে খুব খাটতে পারে, কাজে কর্ম্মে তাকে বিশেষ ভাবে দরকার হয়। ]