পাতা:আরোগ্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তার মত কারো জীবনে বোধহয় এমন এলোমেলো রীতিনীতি, উণ্টোপাল্টা যুক্তি তর্কের কারবার নেই। নিজের প্রয়োজনে যখন যা সুবিধা তাই সে উচিত বলে জানে, তাই সে করে। আত্মীয় বন্ধুর মুখচাওয়া রীতিনীতি নিয়ম কানুনের ধার সে ধারে না । তার চেয়ে প্রণবও বেশী খাটি মানুষ। যত কুসংস্কারের জের টেনে চলুক, যতই সঙ্কীর্ণ হোক তার মন, যত তুচ্ছ স্বার্থ নিয়েই হোক তার কারবার । তার সংস্কার সঙ্কীর্ণতা স্বার্থপরতা আত্মকেন্দ্রিক সুবিধাবাদ নয়, একটা ব্যাপক। জীবনের নিয়ম-অনিয়ম, নীতি-দুর্নীতিকে নিজের জীবনেও স্বীকার করা, সম্মান দেওয়ায় নিদর্শন। অনেকে যে রকম মানুষ, অনেকের যেমন জীবন সেও তেমনি মানুষ হতে, তেমনি জীবন পেতে চায় । কিন্তু তার তো কোন নিয়ম নীতিরই বালাই নেই । ন্যাকামি আর ছুচিবাই ভরা সঙ্কীর্ণ সেকেলে পচা জীবনযাত্রা আঁকড়ে আছে ব’লে বাড়ীর মানুষেরা তুচ্ছ হয়ে গেছে তার কাছে, ওদের সুখ দুঃখ নিয়ে এতটুকু মাথা না ঘামিয়েও একটু করুণা মেশানো অবজ্ঞার দৃষ্টিতে ওদের দিকে তাকায়, কে মরল কে বাঁচল খবর নেওয়াও প্রয়োজন বোধ করে না । অথচ বড় বড় পারিবারিক ব্যাপারে ঠিক ওদের পর্য্যায়ের বাড়ীর কর্ত্তাটির মতই সে তর্জন গর্জন করে, হুকুম দেয়, প্রত্যাশ করে সকলে মাথা নিচু করে তার বিচার মেনে নেবে। এ সংসারের মানানসই বেী সে চায় না, অথচ তেমনি একজনের, একই ধরণের দাসীর মত আত্মসমৰ্পণ আর ভাবালু, স্নেহ ভালবাসা চোরের মত উপভোগ করে। レア8