পাতা:আর্য্যদর্শন - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

w | ! | | - | ১৬ | = . বৈশাখ ১২৮২। । | নৈতিক একতা বদ্ধমূল করিয়াছেন, কিন্তু এই দীর্ঘকালের মধ্যে যে পরিমাণে ভারত | সমাজের ঐক্যগ্রন্থি সংযোজিত হইয়াছে, তাহা নিতান্ত অকিঞ্চিৎকর । দুঃখের বিষয় এট যে পূর্ব্বতন ইংরাজরাজপুরুষগণ ভা রতের ঐক্য ও দৃঢ়তাকে ইংরাজ গবর্ণমেন্টের প্রতিকূল মনে করিতেন, এবং তাহার প্রতিবন্ধকতা করিতে পারিলে আর কিছুই চাহিতেন না। কিন্তু অধুনা সে মতের পরিবর্তন হইয়াছে । মহৎ উদ্দেশ্য সাধন করিবার জন্য যদি | কোন উদ্যোগ হয়, সরকার বাহাদুর তা হাতে সুবাতাস দিবেন ও আনুকূল্য করিৰেন, এরূপ প্রত্যাশা করা যাইতে পারে। অধুনা প্রশ্ন হইতেছে, কিরূপে ভারতের ঐক্য সাধনার্থ উদ্যোগ হইতে পারে । অধুনা ধর্ম্ম দ্বারা কোন দেশের বা সমাজের একতা সম্পাদন করিতে চেষ্টা | পাওয়া দুরাশামাত্র। বিশেষত: ভারতে যে দিন যবন পদার্পণ করিয়াছে, সেই দিন হইতে ধর্ম্মের একতা ভ্রষ্ট হইয়াছে। | তাহার পুনরুদ্ধার বাসনা দিবাস্বপ্নের ন্যায় অলীক কল্পনার বিলসিতমাত্র, কদাপি কার্য্যে পরিণত হইবার যোগ্য বলিয়া বোধ | হয় না। সে আশা কখন কখন হীনমস্তিষ্ক | খ্রীষ্টীয় মিষণরির এবং স্থলদশী অত্যুন্নতি| দলক্রোন্ত ব্রাহ্মের চিত্তকে উস্তান্ত করিতে সমর্থ, কিন্তু কোন মনীষীর মনোবিকার জন্মাইতে পারে না। পরস্তু হিন্দু, মুসলমান, খৃষ্টীয়, পারসীক ও বৌদ্ধধর্ম্ম সকলই উচ্চশ্রেণীর কল্পনাপ্রস্থত ও সভ্য অতএব এই তম জাতির উপযোগী, কিন্তু মূলে ও পরিণামে পরস্পর এত বিসদৃশ, যে তাছাদের মঞ্চে একের জয় ও অন্যান্যের সম্পূর্ণ নিরাস, অথবা সকলের সমবায়ে একটা সর্ব্ববাদিসম্মত ধর্ম্মের স্বষ্টি কোনমতে সম্ভাবিতনহে। অতএ* দেশে পূর্ব্বোক্ত ধর্ম্ম গুলির প্রাচুর্ভাব রহিয়াছে,তাহাতে ধর্ম্মম্বার। সমাজের ঐক্য সাধন সুদূরপরাহত। যিনি এখন ধর্ম্মের প্রভাবে সামাজিক একত সাধন করিতে উৎসুক, তিনি আন্দামান দ্বীপে গমন করুন, অথবা মরীসসের কুলি ও সাঁওতাল প্রভৃতি বর্ব্বর জাতি লইয়৷ প্রবৃত্ত হউন, কৃতকার্য্য হইতে পারিবেন। এখন বিজ্ঞান ও যুক্তির রাজত্ব আরম্ভ হইয়াছে। তৎপ্রভাবে ধর্ম্ম একপাদ হইয়া পড়িয়াছেন, তাহার আর তিনটি পাদের পুনঃস্থাপন সম্ভবপর নহে। শ্রীযুক্ত পোপ— জীশুর রাজ্য ; মোল্লাজী—প্যাকম্বরের প্রাদুর্ভাব ও ভট্টাচার্য্য মহাশয়—কন্ধীর অবতার পুনর্ব্বার প্রত্যাশ করেন করুন, তাহাতে সংসারের অধোগতি ও মানবজাতির অবনতি হইবার আর আশঙ্কা নাই । এই জন্য আমাদের বোধ হয় যে, প্রিন্স বিসমার্ক পোপ ও কাথলিক সম্প্রদায় লইয়া ইয়রোপে যে হুলস্থল তুলিয়াছেন, তাহ বাতিকের কর্ম্ম, কিম্বা নি. জের দুষ্পরিহার্য্য বিদ্বেষের ফল, অথবা কোন কোন দুরবগাহ চুনীতির স্বস্তিবাচন হইবেক আমাদের মতে শেষোক্ত কারণটি প্রকৃত বোধ হয়। ইহ সেই “লৌহময় শোণিতলোলুপ” |