পাতা:আর্য্যদর্শন - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ ১২৮২। বঙ্গবামার ধর্ম্মনৈতিক অবস্থা । ২৯ সত্যের জয় যদি অখণ্ডনীয়, তবে সে সত্যের গতি প্রতিরোধ করা নির্ব্বোধের "কার্য । সে দিন বিলাতে রাজকীয় মহাসভায় বামাজাতির “অনুমতি দিবার” ক্ষমতা লইয়া যে ঘোর বিতগু হইয়া গিয়াছে, তাহাতে আপাততঃ স্ত্রীজাতির পরাজয় বলিতে হইবে বটে, কিন্তু তাহাতে মহিলাগণের পক্ষ আরও প্রবলতর প্রভাব ধারণ করিয়াছে। স্রোতঃ প্রতিরুদ্ধ হইলে তাহ দ্বিগুণ বলে ধাবিত হয়। ইহা কার্য্যের স্বাভাবিক গতি, ইহা অনিবার্য্য। এতদ্দেশে স্ত্রীজাতির প্রস্তাব এক্ষণে উত্থাপিত করা অনেকে অসাময়িক বলিবেন বটে, কিন্তু তৎপ্রতিবিরোধে যতই আপত্তি উত্থাপিত হইবে, তাহাতে বামাগণের পক্ষ বলসঞ্চয় করিবে | এই আমাদিগের বিশ্বাস। আমরা জানি আমাদিগের মত সাধারণ তের বিরোধী। কিন্তু সাধারণমত বহুকাল ধরিয়া একই | ভাৰে সুস্থির হইয়া রহিয়াছে। সেই মতের একবার সঞ্চালন আবশ্যক । সঞ্চালন হইলে তন্মধ্যে যাহা কিছু দূষিত থাকে, অনুন সেই দূষিত অংশ বিদূরিত হইবে। এক্ষণে সর্ব্বসাধারণে এই প্রস্তাবের আন্দোলন করেন এই আমাদের ইচ্ছ। আমরা যদি ভ্রান্ত হই, অবশ্য আমাদিগের ভ্রান্তি বিদূরিত হইবে, এবং আমাদিগের পূর্বপক্ষ পাষাণের উ. পর পরিস্থাপিত হইবে। , - সামাজিক সকল বিষয় হইতেই আমরা | বামীগণকে দূরে রাখিয়াছি। সাধারণ জনগণের মত ও বিশ্বাস এই যে, সমাজের সহিত নাৰীগণের সম্পর্ক নাই। তাহার গৃহধামে আবদ্ধ থাকিয়া গৃহকার্য্যেই ব্যাপৃত থাকিবে । এই মতানুসারে আমাদিগের সমাজ সংগঠিত হইয়াছে, রমণীগণকে আমরা কখন বাটীর বহিদ্বারে আদিতে দিই না। তাহাদিগের রক্ষার জন্য নপুংসকের স্বষ্টি হইয়াছে। কিন্তু এত করিয়াও ফল কি ? বোধ হয় অনেকেই শুনিয়া থাকিবেন, যে এক জন রাজার নিকট কোন গুরুতর মকৰ্দমা উপস্থিত হইলে, তিনি অমনি জিজ্ঞাসা করিতেন—ইহার মূলে কোন স্ত্রীলোক আছেন, সমস্ত বৃহৎ ব্যাপারের মূলে যে স্ত্রীলোক থাকে, বহুদর্শনে তাহার এই সংস্কার জন্মিয়ছিল। স্ত্রীলোক নহিলে কখন কোন ভয়ানক কাণ্ড সংঘটিত, এবং সমাজের শান্তি ভঙ্গ হয় না। স্ত্রীজাতিকে নিতান্ত গোপন করিয়া রাখাই ইহার কারণ। স্ত্রীজাতিও যদি পুরুষের ন্যায় সর্ব্বব্যাপী ও সর্ব্বস্থানে প্রকাশ্য ভাধে গমনাগমন করিতে এবং মিশ্রিত হইতে পারিত, তাহা হইলে তাহার কথন সামাজিক শাস্তিভঙ্গের কারণ হুইত না । পুরুষের মত তাঁহাদিগকেও সামান্য জ্ঞান হইত। এক্ষণে রমণীগণ যেমন পুরুষের উপভোগ্য সামগ্রীর ন্যায় বিবেচিত হয়, তাহাদিগের স্বাধীনতা হইলে সেরূপ ঘটি বার সম্ভাৱনা নাই। তখন পুরুষজাতিও রমণীগণের সমান সম্ভোগ্যরূপে প্রতীয়মান হষ্টৰে। তথন সুন্দরী ললনা পরম ;