পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (চতুর্থ বর্ষ).pdf/২৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

འ་ཅའ་ আর্যাৱর্ত্ত। ৪র্থ বর্ষ-৩য় সংখ্যা। দেখা যায়। এরূপ ক্ষেত্রে কথোপকথনের ভাষায় এরূপ সন্দর্ভ লিখিলে লোক উহা বুঝিয়া উঠিতে পারে না। বিনয়বাবু লিখিয়াছেন,-“ভাব ও ধারণার বিষয়ীভূত বিশ্বের বিবিধ পদার্থ যখন চিত্তকে আঘাত করে, তখন মানবের নিকট ইহাদের প্রকৃতি ও স্বরূপ প্রতীয়মান হয়”-ইত্যাদি । “আঘাত করে”-এই ক্রিয়া পদটি বিনয়বাবু যে অর্থে ব্র্যবহার করিয়াছেন,- সে অর্থে বাঙ্গালার কোনও জিলায় উহা ব্যবহৃত হয় কি না জানি না। বাঙ্গালায়, বিশেষতঃ কথোপকথনের ভাষায়,-উহাদ্বারা প্রহার করা বুঝায়। যে আহত হয় সে বেদন পায় বা প্রতিকুল শক্তিদ্বারা প্রতিহত হয়। ইহাই আমরা বুঝি। আমরা ‘শোকাহত” বলি, কিন্তু ‘আনন্দাহত’ বলি না। তরঙ্গ যখন তরণীর গতি ক্ষুন্ন করে তখন আমরা তরুণী তরঙ্গাহত হইল বলি। বিনয়বাবু সম্ভবতঃ এ স্থলে ইংরাজী strike কথার vÉjN Trf.Klter | It strikes one's imaginaion (fela T) T851) শক্তিকে উদ্বুদ্ধ করে বুঝায়, কিন্তু ইহা কল্পনাশক্তিকে ক্ষুন্ন করে বুঝায় না। এ ক্ষেত্রে ‘আহত করে’ এই বাঙ্গাল ক্রিয়াপদ ইংরাজী strike কথার বিপরীতার্থই প্রকাশ করিল। সেতারের তারে অঙ্গুলির আঘাত করিলে উহা ঝঙ্কার করে, সেই অজুহাতে ইংরেজী strikeাকে বাঙ্গালায় টানিয়া আনিলে চলিবে না। সংস্কৃতে ‘আহত’ শব্দ গুণদ্বারা বিখ্যাত বুঝায়, যথা ‘আহুতলক্ষণ’ । কিন্তু সংস্কৃতের ঐ পারিভাষিক শব্দ বাঙ্গালার কথোপকথনের ভাষায় “খাপ’ খাইবে না। এ ক্ষেত্রে ঐ অর্থও খাটে না । “আহত’ অর্থে গুণিত বা আঘটিত বুঝিলে টানিয়া টুনিয়া বিনয় বাবুর ভাষা সমর্থিত করা যায় বটে ;-কিন্তু ঐ রূপ শব্দ প্রয়োগ,-বিশেষতঃ কথোপকথনের ভাষায় ঐ রূপ শব্দ প্রয়োগ নিতান্তই দুষ্য। উহা ভাষাকে নিতান্তই দুৰ্বোধ্য করিয়া তুলে। বিনয় বাবুর মত চিন্তাশীল ব্যক্তি যদি কথোপকথনের ভাষায় ইংরেজী শব্দের ঐ রূপ তৰ্জমা মিশাইয়া একটা “জগাখিচুড়ী পাকান, তবে ত তঁহার সমস্ত শ্রমই পাণ্ড হইবে, আমাদেরও আপশোষের অন্ত থাকিবে না। এরূপ ‘দোআঁসলা’ শব্দ প্রয়োগের দোষ ছাড়িয়া দিলেও আমরা কথোপকথনের ভাষায় এরূপ সুন্দর ও উচ্চ ভাব প্রকাশের বিরোধী। উহাতে ভাষার দোষে ভাব ক্ষুন্ন হয়। ভাষা ভাবের বাহন। ভাব যদি গম্ভীর হয়, তাহা হইলে ভাষাকেও গম্ভীর করিতে হইবে। বৈকুণ্ঠনাথকে গরুড়ের উপর বসাইতে হইবে, বায়সের উপর বসাইলে চলিবে না। বিনয় বাবুও