পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (চতুর্থ বর্ষ).pdf/২৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૭ક আর্য্যাবর্ত sí 36-8 í MRNJI জাতীয় সাহিত্য সংগঠনে বিলম্ব অনিবার্য্য । যে বঙ্কিমচন্দ্র স্বয়ং বিদেশী আদর্শে উপন্যাস রচনা করিয়া বঙ্গী-সাহিত্যে নূতন আনন্দের উপাদান সঞ্চিত করিয়াছিলেন-যে বঙ্কিমচন্দ্র “ঈশ্বর গুপ্তের অশ্লীলতা প্রকৃত অশ্লীলতা নহে।” জানিয়াও বিদেশী শিক্ষাপ্রসুত নব্য রুচির অনুরোধে গুপ্ত কবির কবিতাসংগ্রহে উহা বাদ দিতে গিয়া তঁহার কবিতাতে নিস্তেজ করিয়াছিলেন এবং আপনার রচনা হইতে সমসাময়িক রুচির ছাপ সর্ব্বপ্রযত্নে মুছিতে চাহিয়াছিলেন - যে বঙ্কিমচন্দ্র নব্য বঙ্গ-সাহিত্যের সমুচ্চ সিংহাসনে সমাসীন তিনিও এ কথা বুঝিয়া ও বুঝাইয়া গিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন – “এক দিন বর্ষাকালে গঙ্গাতীরস্থ কোন ভবনে বসিয়া ছিলাম। প্রদোষকাল - প্রস্ফুটিত চন্দ্রালোকে বিশাল বিস্তীর্ণ ভাগীরথী লক্ষবীচিবিক্ষেপশালিনী-মৃদু পবনহিল্লোলে তরঙ্গভঙ্গচঞ্চল চন্দ্রকারমালা লক্ষ তারকার মত ফুটিতেছিল ও নিবিতেছিল। যে বারেণ্ডায় বসিয়া ছিলাম তাহার নীচে দিয়া বর্ষার তীব্রগামী বারিরাশি মৃদুরব করিয়া ছুটিতেছিল । আকাশে নক্ষত্র, নদীবক্ষে নৌকায় আলো, তরঙ্গে চন্দ্ররশ্মি ! কাব্যের রাজ্য উপস্থিত হইল। মনে করিলাম, কবিতা পড়িয়া মনের তৃপ্তিসাধন করি। ইংরেজি কবিতায় তাহা হইল না - ইংরেজির সঙ্গে এ ভাগীরথীর ত কিছুই মিলে না। কালিদাস ভবভূতিও বহু দূরে। “মধুসুদন, হেমচন্দ্র, নবীনচন্দ্র, কাহাতেও তৃপ্তি হইল না। চুপ করিয়া রহিলাম। এমন সময়ে গঙ্গাব্যক্ষ হইতে মধুর সঙ্গীতধ্বনি শুনা গেল। জেলে জাল বাহিতে বাহিতে গাহিতেছে “3, VEN AN NON দুৰ্গা ব’লে প্রাণ ত্যজিব জাহ্নবী-জীবনে ৷” “তখন প্রাণ জুড়াইল-মনের সুর মিলিল-বাঙ্গালা ভাষায় বাঙ্গালীর মনের আশা শুনিতে পাইলাম—এ জাহ্নবী-জীবন দুর্গা বলিয়া প্রাণ ত্যজিবারই বটে, তাহা বুঝিলাম। তখন সেই শোভাময়ী জাহ্নবী, সেই সৌন্দর্য্যময় জগৎ, সকলই আপনার বলিয়া বোধ হইল-এতক্ষণ পরের বলিয়া বোধ হইতেছিল।” ষে সাহিত্যে সাহিত্য-সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের তৃপ্তি হয় নাই সে সাহিত্যে জনসাধারণের তৃপ্তির সম্ভাবনা আছে কি ? নাই বলিয়াই বঙ্কিমচন্দ্র হইতে