পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (তৃতীয় বর্ষ - প্রথম খণ্ড).pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৯ । পরিষদের প্রতি নিবেদন । . ܟܕ পরিষদের প্রতি নিবেদন। au-0Cas বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ বঙ্গদেশের সাহিত্য ও ঐতিহাসিক চর্চার উন্নতিকল্পে চেষ্টা ও পরিশ্রম করিতেছেন ; কিন্তু কেহ কেহ মনে করেন, এ চেষ্টা পর্য্যাপ্ত নহে। সাহিত্য পরিষদের নিকট বাঙ্গালী আরও অধিক প্রত্যাশা। করিতেছে। সাহিত্যাচার্য্য শ্রীযুক্ত অক্ষয়চন্দ্র সরকার মহাশয় গত সাহিত্যসম্মিলনের অভিভাষণে এ বিষয়ে তীব্র কটাক্ষপাত করিয়াছেন ও বিশিষ্ট উপদেশ দিয়াছেন । মফস্বলবাসী সাহিত্যসেবিগণ অল্পবিস্তরভাবে তেঁাহার সহিত একমতাবলম্বী। কেহ বা সাহিত্য পরিষদ হইতে যাহা হইতেছে, তাহাতেই সন্তুষ্ট থাকিতে চেষ্টা করেন ; কেহ বা অতৃপ্ত হইয়াও স্বীয় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করিতে কুষ্ঠিত হয়েন বা অবসরের অভাবে নীরব রহেন। সভ্যের তালিকায় সংখ্যাবৃদ্ধি দেখিয়া পরিষৎ পরিতুষ্ট হইতে পারেন ; কিন্তু তাহাতে পরিষদের আত্মশ্লাঘার কারণ অপেক্ষা বাঙ্গালীর জ্ঞান-পিপাসা বৃদ্ধির অধিকতর প্রমাণ পাওয়া যাইতেছে। সাহিত্য পরিষদ বঙ্গদেশীয় সাহিত্যসেবা সমিতির মধ্যে প্রথম এবং একক বলিয়া সভ্যগণের মতান্তর-প্রকাশে কুণ্ঠা বোধ হয় । তাই বলিয়া সাহিত্য পরিষদকে আর এ ভাবে থাকিলে চলিবে না ; আর কেবলমাত্র সহরের গণ্ডীতে বৈকালিক অবসরের সদ্ব্যবহারার্থ সঙ্গাসমিতি করিয়া মুদ্রিত বিবরণী রক্ষায় গুরুতর মনোযোগ দিলে হইবে না ; সাহিত্য পরিষদকে বাহিরের-মফস্বলের নানা কার্য্যক্ষেত্রে আবির্ভূত হইয়া, কাব্য করিতে হইবে। বঙ্গদেশ বলিতে কলিকাতা বুঝায় না ; রাজধানীর পরিবর্তনে কলিকাতা হাহাকার করিলেও বোধ হয়। বঙ্গমাতার মুখশ্রী মলিন হইবে না ; বঙ্গমাতা চিরদিনই পঞ্জীর লতাবিতানে, বনস্থলীর অন্তরালে বাস করেন। সহরে বসিয়া বঙ্গদেশের যে ইতিহাস লিখা যায়, তাহার ক্রটি হয় নাই। বঙ্গের ইতিহাস পল্পীর ইতিহাস। যে দিন পল্লীর ইতিবৃত্তের সমষ্টি লইয়া বঙ্গের প্রত্যেক পজিলা-বিভাগের স্বতন্ত্র ইতিহাস প্রণীত হইবে, সেই দিন সেই সকল ইতিহাসের সাহায্যে সহরে বসিয়া সমগ্র বঙ্গদেশের ; বিরাট ইতিহাস প্রণয়ণের সময় আসিবে ; তৎপুর্বে নহে। সুতরাং এক্ষণে ঐতিহাসিকদিগকে অন্য উপায় অবলম্বন করিতে হইবে।